বৃহস্পতিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
৪৫ বছরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

চার দশকে কাটেনি আবাসন সংকট

রাকিব হোসেন, ইবি

চার দশকে কাটেনি আবাসন সংকট

স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ১৯৭৯ সালের ২২ নভেম্বর কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহের শান্তিডাঙ্গার দুলালপুরে আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা করে; যা নানা চড়াই-উতরাই পার করে পা দিয়েছে ৪৫ বছরে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর আবাসিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করার কথা থাকলেও সময়ের পরিক্রমায় তা পারেনি ইবি কর্তৃপক্ষ। ফলে আবাসন সমস্যা চার দশকেও এ বিদ্যাপীঠের ‘অভিশাপ’ হয়ে রইল। তবে নির্মাণাধীন চারটি ১০ তলা ভবনের কাজ শেষ হলে ভোগন্তি কমবে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। প্রতি বছর ২ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী ইবিতে ভর্তি হয়। এর ফলে শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিয়ে কর্তৃপক্ষকে প্রতিবারই সমস্যায় পড়তে হয়। সমস্যা নিরসনে আবাসিক হল বাড়ানোর বা ভারসাম্য বজায় রেখে শিক্ষার্থী ভর্তি করানোর কোনো দৃশ্যমান ভূমিকাও দেখা যায় না। শিক্ষার্থীরা বারবার এ সংকট থেকে মুক্তি চাইলেও আশ্বাস ছাড়া কিছুই দিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। জানা যায়, প্রতিষ্ঠার তিন যুগেও সিকিভাগ শিক্ষার্থীর আবাসিক সুবিধাও নিশ্চিত করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়টি। বর্তমানে মাত্র ২৪ শতাংশ শিক্ষার্থীর আবাসনব্যাবস্থা আছে। ফলে অধিকাংশ শিক্ষার্থীর বাধ্য হয়ে দুই জেলা শহরে এবং ক্যাম্পাসের পাশের এলাকায় অবস্থান করতে হয়।

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) প্রতিবেদন অনুযায়ী, শতকরা ৭৬ শতাংশ শিক্ষার্থীই আবাসনসুবিধার বাইরে রয়েছে। ফলে স্বাধীনতা-পরবর্তী প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়টিতে পড়তে আসা বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই আবাসনসুবিধা থেকে বঞ্চিত।

ইউজিসির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আটটি আবাসিক হল ও ছাত্রাবাস রয়েছে। এসব হল ও ছাত্রাবাসে ৩ হাজার ৫৯৪ শিক্ষার্থীর আবাসনের ব্যবস্থা আছে। যার মধ্যে ১ হাজার ৯৪৬ ছাত্র ও ১ হাজার ৬৪৮ ছাত্রী। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ হাজার ৫৭ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ২৪ শতাংশের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা আছে। বাকি ৭৬ শতাংশের জন্য নেই কোনো আবাসনের ব্যবস্থা।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, চার যুগের একটা বিশ্ববিদ্যালয় চাইলেই সম্পূর্ণ আবাসিক সুবিধা দিতে পারে। এ ছাড়া আবাসিক সুবিধার আলোকেই এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। শুধু সদিচ্ছার অভাব এবং রাজনৈতিক কারণে এ আবাসন সংকট তৈরি করে রাখা হয়েছে বলে মন্তব্য শিক্ষার্থীদের। তবে নতুন হলসহ আবাসিক হলগুলোর ভবন সম্প্রসারণের কাজ শেষ হলে আবাসন সংকট অনেকটা দূর হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী সৌরভ হোসেন বলেন, ‘প্রান্তিক পর্যায় থেকে ইবিতে পড়তে এসেছি। বাসা ভাড়া নিয়ে থাকার সামর্থ্য নেই বলে স্বপ্ন ছিল হলে আমার একটি সুন্দর ঠিকানা হবে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, চার যুগের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আজও আমাকে মাথা গোঁজার ঠিকানা করে দিতে পারেনি।’

উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে আমাদের অতীতের যেমন ঐতিহ্য রয়েছে, তেমন ব্যর্থতাও রয়েছে। আমরা সব ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠে সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করব।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর