তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, নির্বাচনে আসার জন্য সরকার কাউকে চাপ দিচ্ছে না। চাপ সৃষ্টি করলে বিএনপির আরও অনেক নেতা চলে আসতেন। গতকাল সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিক স্বপন কুমার কুন্ডুু রচিত ‘সাংবাদিকতার অ আ ক খ’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। এ সময় পিআইবির মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ, মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা, গ্রন্থকারসহ অন্যরা মোড়ক উন্মোচনে অংশ নেন। সরকার বিএনপি থেকে বেরিয়ে এসে নির্বাচন করার জন্য নেতাদের চাপ দিচ্ছে কি না- এ প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপির অপরাজনীতির সঙ্গে অনেকে দ্বিমত পোষণ করে। তারা এই ধ্বংসাত্মক রাজনীতির সহযাত্রী হতে চায় না। এই জ্বালাও-পোড়াও বদনামটা তাদের ঘাড়ে যাতে না পড়ে সে জন্য এবং দেশের গণতান্ত্রিক ধারাকে অব্যাহত রাখার জন্যই বেরিয়ে এসে নতুন জোট করে নির্বাচন করার ঘোষণা দিচ্ছে বলে আমি মনে করি।তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপির এটি কী জঘন্য ন্যক্কারজনক রাজনীতি যে, গাড়িতে বা কোনো যাত্রীবাহী বাসে আগুন দিলে ১০ হাজার টাকা ‘পেমেন্ট’ দেওয়া হয়, আবার সেটা নিশ্চিত করার জন্য ভিডিও ধারণ করে লন্ডনে তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে এবং এখানের ঊর্ধ্বতন নেতাদের কাছে পাঠাতে হয়। এটি কি কোনো রাজনৈতিক দলের কাজ? জঙ্গি, সন্ত্রাসী সংগঠনও তো এ রকম কাজ করে না। তথ্যমন্ত্রী বলেন, এই অপরাজনীতি যারা করে তাদের রাজনীতি করার অধিকার থাকা উচিত নয়। অগ্নিসন্ত্রাসী যাদের ধরা হয়েছে এবং যারা এই জবানবন্দি দিয়েছে প্রত্যেকেই বিএনপি নেতা, একজন ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতিও আছেন সেখানে। পোশাক শ্রমিক কল্পনা আক্তারকে হুমকি বিষয়ে জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, কেউ যদি নিরাপত্তাহীনতাবোধ করেন, তিনি প্রথমত পুলিশের দ্বারস্থ হন, অন্তত একটা জিডি করেন। কল্পনা আক্তার কোনো জায়গায় জিডি করেছেন বা তিনি নিরাপত্তাহীনতাবোধ করছেন সেটিও মৌখিকভাবে কাউকে বলেছেন বলে আমাদের জানা নেই। এখন কেউ যদি বাংলাদেশে বৃষ্টি হলে ওয়াশিংটনে ছাতা ধরে তাহলে সে নিয়ে আমার বলার কিছু নেই। মন্ত্রী বলেন, কিছু মানুষ আছে, দেশে বৃষ্টি হলে হয় মস্কোতে ছাতা ধরে, না হয় ওয়াশিংটনে ছাতা ধরে। এখন বিষয়টা সে রকম কি না আমি জানি না। তবে এ নিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কথা বলেছেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে। সরকারের কাছে যদি তিনি রিপোর্ট করেন অবশ্যই সরকার তাকে সর্বোচ্চ সহায়তা করবে, নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য যা যা করা প্রয়োজন সেটি করবে- উল্লেখ করেন হাছান মাহমুদ।
দেশে বিএনপি-জামায়াতের অবরোধে গাড়ি পোড়ানো-হামলার পরও সিপিডি, টিআইবি, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল চুপ কেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের জনগণ এখন সিপিডি, টিআইবি, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বিবৃতি খুঁজছে, তারা কোথায়। দেশে এত কিছু ঘটে যাচ্ছে আগুনসন্ত্রাস হচ্ছে, মানুষ মারা যাচ্ছে, স্কুলে আগুন দিচ্ছে, তখন উনারা কোথায়, তারা এখন নিশ্চুপ কেন? আমি শঙ্কিত তারা কোনো অসুস্থ কি না বা মানসিকভাবে তাদের কোনো সমস্যা হয়েছে কি না, এটি অনেকে প্রশ্ন রেখেছেন- বলেন তথ্যমন্ত্রী। মন্ত্রী বলেন, তারা এত জ্ঞানী এবং দেশ সম্পর্কে এত সচেতন যে, কেউ কাউকে ঘুষি মারলেও বিবৃতি দিতে চায় বা দেয়, তারা এখন কোথায়, এটি জনগণের প্রশ্ন। হাছান মাহমুদ বলেন, ফিলিস্তিনের গাজায় যেভাবে হত্যাযজ্ঞ চলছে, বাংলাদেশে এত কিছু ঘটছে ২০১৩, ১৪, ১৫ সালেও জ্বালাও-পোড়াও হয়েছে অথচ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তখনো কিছু বলেনি, এখনো নিশ্চুপ।