টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারী স্বল্প আয়ের মানুষের মাঝে ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির জন্য ১ কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সয়াবিন তেল ক্রয়ের প্রস্তাবটিসহ সাত ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এতে ব্যয় হবে ৮ হাজার ২৬২ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। গতকাল অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিটির এক ভার্চুয়াল সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। সভা শেষে ব্রিফিং করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ১ কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দরপ্রস্তাবের সব প্রক্রিয়া শেষে টিসিবি কর্তৃক সুপারিশকৃত রেসপনসিভ একমাত্র দরদাতা প্রতিষ্ঠান প্রিন্সিপ্যাল : গ্রিন ন্যাশনাল বিল্ডার্স অ্যান্ড ডেভেলপার্স, ভারতের কাছ থেকে ২ লিটার পেটজাত বোতলে প্রতি লিটার ১৫৪.২৯ টাকা হিসেবে ১ কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ক্রয়ে ব্যয় হবে ১৪৩ কোটি ১৮ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। তিনি বলেন, ‘আরিচা (বরঙ্গাইল)-ঘিওর-দৌলতপুর-নাগরপুর-টাঙ্গাইল আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথমান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ’ প্রকল্পের একটি প্যাকেজের পূর্ত কাজ ক্রয়ের জন্য এক ধাপ দুই খাম পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে চারটি দরপত্র জমা পড়ে। চারটি দরপত্রই রেসপনসিভ হয়। এর জন্য সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লি. প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এতে ব্যয় হবে ১১২ কোটি ৮১ লাখ ৯০ হাজার ৭৯২ টাকা। তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভায় ১১ মেগাওয়াট ক্ষমতার বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনের দরপ্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। বিল্ড ওন অপারেট পদ্ধতিতে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি স্থাপন করবে বেসরকারি খাতে যৌথভাবে সিদ্দিক ফেব্রিক্স লিমিটেড-ইনটেক এনার্জিস এবং সাউদিয়া জার্মান পাওয়ার প্লান্ট লিমিটেড (এসএফ-এলই-এসজিপিপিএল জেভি)। প্রতি ইউনিট (কিলোওয়াট ঘণ্টা) বিদ্যুতের দাম ০.১৯১০ মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ২১.১০৫ টাকা) হিসেবে ২৫ বছর মেয়াদে উদ্যোক্তা সংস্থার কাছ থেকে বিদ্যুৎ ক্রয়ে ব্যয় হবে ৪০৬৮ কোটি টাকা। সভায় ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলায় ১০০ মেগাওয়াট (এসি) সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের ট্যারিফ প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এতে ব্যয় হবে ৩ হাজার ৫৬৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে কাতার থেকে ষষ্ঠ লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এতে ব্যয় হবে ১ কোটি ১৫ লাখ ১৪ হাজার ৯০০ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ১২৭ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৯০০ টাকা।কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো), বাংলাদেশের কাছ থেকে নবম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ১২১ কোটি ৮ লাখ ৭১ হাজার ২৫০ টাকা। এর আগে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা হয়। সভায় বিভিন্ন দেশ থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সংস্থাভিত্তিক চুক্তির মাধ্যমে নন-ইউরিয়া সার (টিএসপি, ডিএপি এবং এমওপি) আমদানির নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।