শনিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
সংক্ষিপ্ত

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসন দখলদারির বড় উদাহরণ

-ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলিরা যে গণহত্যা ও দখলদারি চালাচ্ছে; এটি আধুনিক সময়ে সামরিক দখলদারির সবচেয়ে বড় উদাহরণ। ফিলিস্তিনে গণহত্যা চলছে এবং এটাকে থামানো যাচ্ছে না। ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে গতকাল বিকালে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘ফিলিস্তিন সংহতি কমিটি, বাংলাদেশ’-এর আয়োজনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী এ কথা বলেন। পরে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সমাজিক ও ছাত্র সংগঠনসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণে একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি শাহবাগ মোড় থেকে শুরু হয়ে এলিফ্যান্ট রোড, সায়েন্সল্যাব মোড়, নিউমার্কেট থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার বিভিন্ন সড়ক ঘুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।

সমাবেশে পথনাটক, গান, কবিতা আবৃত্তি প্রভৃতির মাধ্যমে ফিলিস্তিনের পক্ষে জাগ্রত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। পরিবেশনা শেষে বাংলাদেশে অবস্থিত ফিলিস্তিন দূতাবাসের পাঠানো বিবৃতি পাঠ করেন চৌধুরী মোফাদ আহমেদ। পরে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। মূল বক্তব্য প্রদান করেন ফিলিস্তিন সংহতি কমিটি, বাংলাদেশের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।

এ সময় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সমালোচনা করে অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ফিলিস্তিনিদের মুক্তিসংগ্রামে যখন ইসরায়েলের দুটো ভবন ধ্বংস হয়। তখন বিশ্বজুড়ে তার নিন্দা হয়। এই যে গণমাধ্যম ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো গণহত্যাকে অস্বীকার করে বলতে চায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। এটা তো সংঘর্ষ নয়। এটা গণহত্যা। তিনি বলেন, দুঃখের বিষয় এই যে, ইহুদিদের পূর্বপুরুষরা হিটলারের যে বর্বরতা দেখেছে, আজ তারা তা ভুলে গেছে।

লিখিত বক্তব্যে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘চলতি বছরের ৭ অক্টোবর থেকে দখলদার ইসরায়েলের ঘৃণ্য মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধের নতুন পর্যায়টি নজিরবিহীন গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ রূপে হাজির হয়েছে, যা ৮৪ দিন ধরে বিরামহীনভাবে অব্যাহত রয়েছে। এই সময়ে ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী ২১ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করেছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছে ৮ হাজারের বেশি শিশু এবং ৬ হাজারের বেশি নারী। অনুমান করা হচ্ছে আরও ৮ হাজার মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন। আন্তর্জাতিক কোনো আইন বিধি ইসরায়েল মানছে না। প্রকৃতপক্ষে ‘ইসরায়েল গাজাকে আন্তর্জাতিক আইনের কবরস্থানে পরিণত করেছে’। ইসরায়েলে হামাসের আক্রমণকে তারা অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করছে। কিন্তু ইসরায়েল ফিলিস্তিন ভূখে  হত্যা, জুলুম করে যাচ্ছে ১৯৪৮ থেকে, আর হামাস প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৯৮৭ সালে। এই দুই সময়ের মধ্যেই দখলদারদের হাতে প্রায় ৫০ হাজার ফিলিস্তিনি খুন হয়েছেন। কাজেই এসব অজুহাত কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

সমাবেশে সাম্রাজ্যবাদ মদদপুষ্ট ইসরায়েলি আগ্রাসন, দখল, গণহত্যা এবং অব্যাহত জুলুমের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতিরোধকে সমর্থন করে তিন দফা দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হলো- ফিলিস্তিনিদের ওপর দখলদার ইসরায়েলি নারকীয় আগ্রাসন ও গণহত্যা অনতিবিলম্বে বন্ধ করতে হবে; ইসরায়েলী দখলদারিত্ব ও নিয়ন্ত্রণের পরিপূর্ণ অবসান ঘটিয়ে ফিলিস্তিনের উভয় অংশের মানুষের জান-মাল, জীবনজীবিকা, নিরাপত্তা ও পরিপূর্ণ মানবাধিকার এবং মর্যাদা রক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে; আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিভিন্ন চুক্তি, প্রস্তাব ও শর্ত/মানদন্ড অনুযায়ী স্বাধীন ও সার্বভৌম প্যালেস্টাইন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা করতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর