বুধবার, ১০ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

তৃণমূলে ছড়িয়ে পড়েছে দ্বন্দ্ব

নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতায় উদ্বেগে স্থানীয় নেতারা

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

তৃণমূলে ছড়িয়ে পড়েছে দ্বন্দ্ব

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর খুলনার বিভিন্ন স্থানে পরাজিত আওয়ামী ঘরানার স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলা হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিজয়ী নৌকার কর্মী-সমর্থকরা এ হামলা করেছেন বলে অভিযোগ স্বতন্ত্র প্রার্থীদের। এতে তৃণমূলে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে দ্বন্দ্ব-বিভেদ ছড়িয়ে পড়েছে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম, মারধর, বাড়ি ভাঙচুর, জমি-দোকান দখলে হুমকিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর হয়ে নির্বাচনি কাজে অংশ নেওয়া আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মীই এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এতে উদ্বেগ প্রকাশ করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা হামলার ঘটনায় উসকানি বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে খুলনা-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ফুলতলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আকরাম হোসেন বলেন, ‘ভোটে ফলাফল ঘোষণার পর আমার নির্বাচনি এজেন্ট সাবিনা বেগমকে মারধর ও বাড়ি-দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়। পল্লীশ্রী কলেজ কেন্দ্রের এজেন্ট প্রিয়াংকা মন্ডল, তার স্বামী প্রকাশ মন্ডল ও শ্বশুর-শাশুড়িকে মারধর করা হয়। বাদুড়গাছায় নয়ন গাজী ও তার স্ত্রীকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়। সাহস ইউনিয়নের নৌকার সমর্থক ইলিয়াস ফকিরের নেতৃত্বে আমার সমর্থকদের পিটিয়ে জখম করা হয়। মাগুরখালি ইউনিয়নে নীতীশ মন্ডল, বিমল কৃষ্ণের বাড়ি-দোকান ভাঙচুর করা হয়। শোভনায় আব্বাস খান, দীনেশ ও সত্য মল্লিকের দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’ আকরাম হোসেন বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে বিভক্ত করার জন্যই এ ধরনের অপকর্ম চালানো হচ্ছে। বিজয়ী প্রার্থী তার বাহিনীকে নিবৃত্ত করছেন না। ফলে অত্যাচারের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে।’ একইভাবে খুলনা-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এস এম মোর্ত্তজা রশিদী দারা খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, বিজয়ী নৌকা প্রার্থীর সমর্থকরা তেরখাদার ছাগলাদাহ ইউনিয়নে এসকেন্দ শেখকে কুপিয়ে জখম করে।

এ ছাড়া আজগড়ায় আবদুল কুদ্দুস, তার মেয়ে শিল্পীকে মারধর, রূপসার তিলকে দেব প্রসাদ কুন্ডুর মাথা ফাটিয়ে দেওয়াসহ বিভিন্ন স্থানে কমপক্ষে ২২টি হামলা-মারধরের ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, ‘বিজয়ী নৌকার প্রার্থীর সমর্থক নব্য হাইব্রিডরা এখন পোড় খাওয়া অভিমানী আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীর ওপর হামলা করছে। এতে দল আরও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুজিত অধিকারী বলেন, ‘হামলার পেছনে যারা উসকানি দিচ্ছে তারাই মূলত দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এ নির্বাচনে বিদ্রোহী ছিল না, স্বতন্ত্ররা কৌশলগত কারণে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। কিন্তু এখন স্বতন্ত্রদের কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা করছে নব্য আওয়ামী লীগররা। যারা বংশপরম্পরায় দলের সঙ্গে জড়িত, তারা বিবাদে যুক্ত হননি। আমরা সংঘর্ষ চাই না। উসকানিমূলক আপত্তিকর কথাবার্তা বন্ধ করতে হবে।’

সর্বশেষ খবর