বুধবার, ১০ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

পাথর আমদানি বন্ধ সিলেটে

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

আমদানি শুল্ক বৃদ্ধির প্রতিবাদে সিলেটের তামাবিলসহ সবকটি স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশন দিয়ে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ করে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। চার মাসের ব্যবধানে ফের শুল্ক বৃদ্ধি অযৌক্তিক দাবি করে তারা আমদানি বন্ধ করেছেন। বর্ধিত শুল্ক প্রত্যাহার না হলে সিলেটের কোনো স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশন দিয়ে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি না করার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছেন তারা।

গত সোমবার থেকে আমদানি বন্ধ থাকায় সরকারের রাজস্ব আদায়ও কমেছে। আমদানিকারকরা জানান, এমনিতেই পাথর ও চুনাপাথর ব্যবসায় মন্দা যাচ্ছে। গত বছরের আগস্ট মাসের শেষের দিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) টন প্রতি ২ ডলার ডিউটি (ইম্পোর্ট অ্যাসেসমেন্ট রেট) বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। এর প্রতিবাদে ব্যবসায়ীরা পাথর ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ করে দেন। আন্দোলনের মুখে কাস্টমস কর্মকর্তারা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে প্রতি টনে ডিউটি সাড়ে ১১ ডলার থেকে ১১.৭৫ ডলার নির্ধারণ করেন। আলোচনার মাধ্যমে ডিউটি নির্ধারণ করায় ব্যবসায়ীরা ফের পাথর ও চুনাপাথর আমদানি শুরু করেন।

এদিকে চার মাসের ব্যবধানে ৪ জানুয়ারি সিলেট অঞ্চলের স্থলবন্দরগুলোতে ভারত থেকে আমদানি করা বোল্ডার পাথর, ভাঙা পাথর ও চুনাপাথরের ওপর শুল্ক বৃদ্ধি করতে সিলেট কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারকে একটি পত্রের মাধ্যমে নির্দেশ দেয় এনবিআর। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার থেকে বর্ধিত শুল্কারোপ শুরু হয়। এনবিআরের নির্দেশক্রমে আগের শুল্কের চেয়ে আরও ৬ ডলার করে বাড়তি শুল্কারোপ করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। কিন্তু চার মাসের ব্যবধানে ফের শুল্ক বৃদ্ধির প্রতিবাদে ব্যবসায়ীরা ভারত থেকে সব ধরনের পাথর আমদানি বন্ধ করে দেন।

সিলেট বিভাগীয় স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশনসমূহের ব্যবসা পরিচালনা সংক্রান্ত কমিটির আহ্বায়ক এমদাদ হোসেন জানান, পাথর ও চুনাপাথরের ব্যবসায় এমনিতেই মন্দা যাচ্ছে। এরপরও চার মাস আগে একবার শুল্ক বৃদ্ধি করা হয়েছে। এখন আবার টনপ্রতি ২ ডলার শুল্ক বৃদ্ধি করা হয়েছে। এই বর্ধিত শুল্ক দিয়ে ব্যবসায়ীদের কোনোভাবেই পাথর আমদানি করা সম্ভব নয়। এর কারণ হিসেবে এমদাদ হোসেন জানান, ব্যবসায়ীরা আগের শুল্ক ধরেই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পাথর ও চুনাপাথর সরবরাহের চুক্তি করেছেন। কিন্তু এখন শুল্ক বাড়ানো হলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। আর ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোও শুল্ক বৃদ্ধির জন্য পাথরের মূল্য বৃদ্ধিতে রাজি হবে না। তাই ব্যবসায়ীরা বাধ্য হয়ে আমদানি বন্ধ করে আন্দোলনে নামতে হচ্ছে।

এদিকে, আমদানি বন্ধ থাকায় পাথর লোড, আনলোড ও পরিবহনের সঙ্গে জড়িত কয়েক হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। গত দুই দিন ধরে স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশনগুলোতে নেমে এসেছে স্থবিরতা। তামাবিল স্থলবন্দরের শ্রমিক সালাহ উদ্দিন জানান, পাথর, চুনাপাথর লোড-আনলোডের কাজ করে তিনি পাঁচ সদস্যের পরিবার চালান। কিন্তু দুই দিন ধরে আমদানি বন্ধ থাকায় ঘরে বাজার নিতে পারছেন না। বৃদ্ধ মায়ের ওষুধও কিনতে পারেননি। বেকার হওয়া হাজার হাজার শ্রমিকের পরিবারের দিকে তাকিয়ে সৃষ্ট জটিলতা নিরসন করে আমদানি চালুর দাবি জানান তিনি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর