রবিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

খাল পুনঃখননে ধসে পড়েছে রাস্তা

ঝুঁকিতে বাড়িঘর

রাহাত খান, বরিশাল

বরিশাল নগরীর অভ্যন্তরে চলমান সাতটি খাল খননের ফলে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে দুই তীরের অসংখ্য বসতবাড়ি এবং রাস্তাঘাট। গাইড ওয়াল নির্মাণ না করে খনন করায় খালের পাশের মাটি এবং রাস্তা ধসে পড়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। খালের তীর ধসে পড়ায় নির্দিষ্ট পরিমাণ মাটি না কেটেই কাজ শেষ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। বর্ষা মৌসুমে নগরবাসীকে জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষায় নগরীর প্রধান প্রধান খাল পুনঃখননের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সদর আসনের এমপি ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। এ লক্ষ্যে নগরীর জেল খাল, আমানতগঞ্জ খাল, রূপাতলী খাল, পলাশপুর খাল, সাগরদী খাল, চাঁদমারী খাল ও ভাটার খালের মোট ১৭ কিলোমিটার পুনর্খননের জন্য দুই বছর আগে টেন্ডার আহ্বান করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু তৎকালীন মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর বাধার কারণে ওই সময় ৬ কোটি ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে খালগুলো পুনঃখনন করতে পারেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড। সম্প্রতি সিটি করপোরেশনের পালা বদল হলে গত ডিসেম্বর থেকে নগরীর অভ্যন্তরের প্রধান সাতটি খাল খনন শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ইতোমধ্যে এই পুনর্খনন কাজ অনেক দূর এগিয়েছে। তবে খাল পুনঃখনন করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছে তারা। সরেজমিন দেখা যায়, খাল পুনঃখননের কারণে নবগ্রাম রোড ও সাগরদী এলাকায় খালের তীরে থাকা কয়েকটি সড়কে বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। অনেক জায়গায় খালের তীর ধসে পড়েছে। খালের তীরে থাকা বহুতল ও ছোট ভবনের তলার মাটি ধসে পড়েছে। এতে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে বহু বসতবাড়ি এবং সড়ক। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এ ধরনের খাল খননের জন্য আগে গাইড ওয়াল নির্মাণ করা জরুরি।

 আগে গাইড ওয়াল নির্মাণ করে খাল পুনর্খনন করা হলে তীরের মাটি ধসে পড়ত না। বাড়িঘর-রাস্তাঘাটও ঝুঁকিতে পড়ত না। নবগ্রাম রোডের বাসিন্দা আবদুল হালিম জানান, খাল পুনর্খননে জলাবদ্ধতা দূর হবে। খালে পানি প্রবাহ ফিরে আসায় দূষণ কমবে। কিন্তু খাল পুনর্খনন করতে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে সড়কে ধস নেমেছে। এখন সড়কে চলাচলে সমস্যা হচ্ছে।

আলতাফ হোসেন নামে স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, খাল পুনর্খননের কারণে নবগ্রাম রোড খান সড়কে একটি মসজিদের দেয়ালে ফাটল ধরেছে। খনন করা মাটি দিয়ে দেয়ালের ফাটল ঢেকে দেওয়া হয়েছে।

ওই এলাকার আরেক বাসিন্দা আবদুর রব জানান, খাল পুনর্খনন করতে গিয়ে খালের ওপর নির্মিত অনেক সেতু ভেঙে ফেলা হয়েছে। এতে তাদের চলাচলে অনেক সমস্যা হচ্ছে।

প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, এ ধরনের পুনর্খননের আগে খালের পাশে গাইড ওয়াল নির্মাণ করা উচিত ছিল। তাহলে খালের তীর ধসে পড়ার আশঙ্কা থাকত না। বাড়িঘরও ঝুঁকিতে পড়ত না।

বরিশাল পানি উন্নয়ন রোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খালেদ বিন অলীদ বলেন, সারা দেশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের খাল খনন প্রকল্প চলছে। ওই প্রকল্পের আওতায় বরিশাল নগরীর সাতটি খাল পুনর্খনন করা হচ্ছে। পুনর্খনন করতে গিয়ে কয়েকটি জায়গায় রাস্তা ধসে গেছে। এর মধ্যে কয়েকটি রাস্তা সংস্কার করে দেওয়া হয়েছে। অন্যগুলোও সংস্কার করে দেওয়া হবে। নতুন করে এখন যেসব জায়গায় খাল খনন করা হচ্ছে সেখানে বল্লি (পাইল) স্থাপন করে খনন করা হচ্ছে যাতে তীর ধসে না পড়ে। পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ না থাকায় খাল পুনর্খননের আগে গাইড ওয়াল নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি বলে জানান নির্বাহী প্রকৌশলী খালেদ বিন অলীদ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর