শুক্রবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

বারবার উদ্ধার, বারবার দখল

ফুটপাত উদ্ধারে এবার অনড় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

বারবার উদ্ধার, বারবার দখল

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ৮ ফেব্রুয়ারি একযোগে সাতজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে। এতে নগরের ফলমন্ডি লেন থেকে নিউমার্কেট, জিপিও, আমতল পর্যন্ত অবৈধভাবে সড়ক-ফুটপাত দখল করে গড়ে ওঠা প্রায় ১ হাজার স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। কিন্তু ১২ ফেব্রুয়ারি হকাররা ফের ফুটপাত দখলের চেষ্টা করেন। ওই দিন আবারও চসিকের চারজন ম্যাজিস্ট্রেট পুনর্দখল ঠেকাতে অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় হকার-পুলিশ সংঘর্ষে চসিকের চার কর্মী আহত হন। তবে চসিক এবার ফুটপাত ও সড়ক উদ্ধারে অটল। উচ্ছেদের সময় সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা করেছে চসিক। এ ব্যাপারে কাউকে কোনো ছাড় না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সংস্থাটি। বুধবার দুপুরে চসিক মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণের তিন বছর পূর্তি অনুষ্ঠানেও এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থানের কথা ব্যক্ত করা হয়। তা ছাড়া গতকাল বিকালে ‘চট্টগ্রাম সচেতন নাগরিক সমাজ’-এর ব্যানারে অবৈধভাবে ফুটপাত দখল ও সড়কে যানজট সৃষ্টির প্রতিবাদে একটি মানববন্ধন করা হয়। চসিক মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা ফুটপাত উদ্ধারে কোনো ছাড় দিতে রাজি নই। নিউমার্কেট এলাকায় ফুটপাত দখল করছে ৫ হাজার হকার। কিন্তু এর কষ্টের খেসারত দিতে হচ্ছে লাখ লাখ মানুষকে। তাই ফুটপাত উদ্ধারে আমরা অটল থাকব। কোনো তদবির বা আবদার প্রশ্রয় দিচ্ছি না। তিনি বলেন, উচ্ছেদ করা ফুটপাত রক্ষায় সেখানে কাঁটাতারে ঘেরাও করে সৌন্দর্যবর্ধন করা হবে। তা ছাড়া নিয়মিত একজন ম্যাজিস্ট্রেট বিষয়টা মনিটরিং করছেন। সঙ্গে পুলিশ বিভাগও এ ব্যাপারে তদারকি করছে।’ চট্টগ্রাম সচেতন নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক ওসমান গণী আলমগীর বলেন, ‘আমরা সিটি করপোরেশনের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। ফুটপাত পথচারীর এবং সড়ক যানবাহন চলাচলের। চসিক এ নিয়মটি পালনের জন্য ফুটপাত উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করছে। আমরা চাই তারা সফল হোক। কারণ এখানে নিয়মিতই ছাত্রছাত্রীরা ছিনতাই, ব্ল্যাকমেলসহ নানা হয়রানির শিকার হয়। ফুটপাত হকারমুক্ত হলে এ সমস্যা থাকবে না।’ সংগঠক হাবিবুর রহমান তারেক বলেন, ‘ফুটপাত হকারদের দখলে হওয়ায় মূল সড়ক দিয়েই পথচারীদের ঝুঁকি নিয়ে চলতে হয়। চসিক হকার উচ্ছেদ করে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।  এখন দরকার উচ্ছেদ করা স্থানগুলো রক্ষা করা।’ চসিকসূত্রে জানা যায়, বর্তমানে নগরে ১৫১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে ১৪৫টি পাকা ফুটপাত আছে। এর অধিকাংশই হকারদের দখলে ছিল। তা ছাড়া ৮৫০ কিলোমিটার পিচঢালা সড়ক আছে। অনেক এলাকার সড়কও হকারদের দখলে। ওয়ান-ইলেভেনের সময় চট্টগ্রাম নগরের অনেক ফুটপাত উদ্ধার করা হয়েছিল। পরে ২০১৫ সালে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উদ্যোগেও নগরের অনেক ফুটপাত উদ্ধার করা হয়। তা ছাড়া বিভিন্ন সময় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) অভিযান পরিচালনা করে সড়ক ও ফুটপাত উদ্ধার করে। কিন্তু কোনো ফুটপাতই রক্ষা করা যায়নি। উচ্ছেদের পর আবারও হকাররা দখল করে। ফলে অভিযানের কাক্সিক্ষত সুফল মেলে না। তবে এবার চসিক ফুটপাত উদ্ধার এবং রক্ষায় অটল অবস্থান নিয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর