শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা
চট্টগ্রাম

কাজে আসছে না ৪ কোটি টাকার ফুটওভার ব্রিজ

যন্ত্রাংশ খুলে নিয়ে যাচ্ছে বখাটেরা

ইমরান এমি, চট্টগ্রাম

কাজে আসছে না ৪ কোটি টাকার ফুটওভার ব্রিজ

কাজে আসছে না প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত চট্টগ্রামের একমাত্র এস্কেলেটর ফুটওভার ব্রিজটি। অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলের অভিযোগে দুই বছর ধরে বন্ধ করে রাখা হয়েছে এটি। এ সুযোগে ব্রিজের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ খুলে নিয়ে গেছে বখাটেরা। ফুটওভার ব্রিজটি বন্ধ থাকায় ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হতে হচ্ছে পথচারীদের।

চসিক সূত্র জানায়, ২০২০ সালে নগরীর জাকির হোসেন রোডের ‘চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের’ সামনে এস্কেলেটর যুক্ত ফুটওভার ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। ৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ব্রিজটির দৈর্ঘ্য ৬৫ ফুট ও প্রস্থ ৯ ফুট। হাসপাতালে আসা রোগী-স্বজনদের নিরাপদে রাস্তা পারাপারের জন্যই সাধারণ সিঁড়ির পাশাপাশি ব্রিজটিতে যুক্ত করা হয়েছিল চলন্ত সিঁড়ি। তবে নামার জন্য রাখা হয়েছে সাধারণ সিঁড়ি। এ ছাড়া এস্কেলেটরটি সেন্সরযুক্ত হওয়ায় পথচারী এস্কেলেটরে পা দিলে সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলবে। আর মানুষ পারাপার না করলে সেটি নিজ থেকেই বন্ধ হয়ে যাবে। তাই এতে বিদ্যুৎ অপচয়েরও সুযোগ নেই। কিন্তু উদ্বোধনের দুই মাস পরই করোনা মহামারির অজুহাতে বন্ধ হয়ে যায় এস্কেলেটরের কার্যক্রম। সেই থেকে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে সিঁড়ির ফটক।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের যে স্ট্যাডি তাতে দেখা গেছে, এ ফুটওভার ব্রিজ যে সংখ্যক লোক ব্যবহার করছে তার তুলনায় বিদ্যুৎ বিল অনেক বেশি আসে। যার কারণে এটি বন্ধ রয়েছে। আমরা নতুন জায়গা খুঁজছি, নতুন জায়গায় এটি পুনঃনির্মাণ করা হবে। যাতে নগরবাসী নিরাপদে সড়ক পারাপার হতে পারে।

সরেজমিন দেখা যায়, নগরীর ব্যস্ততম জাকির হোসেন রোডের ওয়ারলেস মোড়ে ঝুঁকি নিয়েই রাস্তা পার হচ্ছেন পথচারীরা। কেউ গন্তব্যের উদ্দেশ্যে, কেউ বা রাস্তা পার হচ্ছেন স্কুল-কলেজে যাওয়ার জন্য। কিন্তু এই সড়কের ১০০ গজ দূরেই রয়েছে চসিকের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ফুটওভার ব্রিজ। সড়ক পার হতে কেউই ব্যবহার করছেন না ফুটওভার ব্রিজটি। এটি এখন কেবল একটি সৌন্দর্যবর্ধক হিসেবেই রয়ে গেছে। দীর্ঘদিন অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকায় ফুটওভার ব্রিজটি এখন অপরাধীদের নিরাপদ আখড়া হিসেবে পরিণত হয়েছে। রাতে মাদক সেবনসহ অসামাজিক কাজের নিরাপদ স্থান হিসেবে ব্যবহার হয় এটি। ইতোমধ্যে বন্ধ থাকার সুযোগে আধুনিক এই ফুটওভার ব্রিজের নানা যন্ত্রাংশ চুরি করে নিয়ে গেছে সংঘবদ্ধ চোর চক্র। বৃষ্টির পানি জমে নষ্ট হয়ে গেছে প্রায় সব যন্ত্রপাতি।

জালাবাদ হাউজিং এলাকার বাসিন্দা ফারজানা সুলতানা বলেন, করোনাকালে ব্রিজটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে মহামারি শেষ হলেও ব্রিজটি আর চালু হয়নি। স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ফুটওভার ব্রিজটি এই এলাকায় স্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু এখন মানুষ আর এটি ব্যবহার করতে পারছে না। ফুটওভার ব্রিজ না থাকার কারণে স্কুলপড়ুয়া সন্তানদের নিয়ে ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হতে হয়।

সর্বশেষ খবর