শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা
দুদকের অভিযান

৪০০ কোটি টাকার সরকারি বাড়ি ব্যক্তিমালিকানায়

অভিযোগ থেকে জানা যায়, ৪৭ বছর ধরে ঝুলে থাকা জটিলতার সমাধান হয়ে গেছে মাত্র পাঁচ মাসেই। গায়েব হয়ে গেছে সংশ্লিষ্ট নথি

নিজস্ব প্রতিবেদক

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে রাজধানীর গুলশানের পরিত্যক্ত একটি বাড়ি ব্যক্তি মালিকানায় নামজারি করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রায় ৪০০ কোটি টাকার এই বাড়ি বেহাতের অভিযোগে সেখানে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এনফোর্সমেন্ট টিম বুধবার গুলশান-২ এর ৯৮ নম্বর সড়কে ওই বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে।

এ বিষয়ে গতকাল দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) আকতারুল ইসলাম জানান, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে গুলশান এলাকায় ১৯৭১ সালে পরিত্যক্ত একটি বাড়ি ব্যক্তিমালিকানায় নামজারি করে দেওয়ার অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযান চালায়। দুদকের টিম অভিযোগ সংশ্লিষ্ট বাড়ির যাবতীয় নথি, এ-সংক্রান্ত হাই কোর্টের আদেশ, গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের চিঠির প্রেক্ষিতে রাজউক কর্তৃক ব্যক্তি মালিকানায় নামজারির সব রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে। সংগৃহীত সব রেকর্ডপত্র যাচাই করে অভিযোগের বিষয়ে কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবে।

এদিকে অভিযোগ থেকে জানা যায়, ৪৭ বছর ধরে ঝুলে থাকা জটিলতার সমাধান হয়ে গেছে মাত্র পাঁচ মাসেই। গায়েব হয়ে গেছে সংশ্লিষ্ট নথিও। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় নিজেদের ন্যায্য হিস্সা ছেড়ে দ্বিতল ভবনসহ ১ বিঘা ৫ কাঠা ১০ ছটাক আয়তনের একটি বাড়ি ব্যক্তিমালিকানায় হস্তান্তর করেছে। ঢাকার গুলশান-২ এর সিইএন (সি) ব্লকের ৯৮ নম্বর সড়কের ৬ নম্বর বাড়ির বর্তমান মূল্য প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। ৯৮ নম্বর সড়কের ৬ নম্বর বাড়ির পুরনো মালিকের নাম নবাব ওয়াজি উল্লাহ। স্বাধীনতার আগে এখানে একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। পরবর্তী সময়েও এর কোনো পরিবর্তন করা হয়নি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর বাংলাদেশ ছেড়ে পাকিস্তানে পাড়ি জমান ওয়াজি উল্লাহ। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতির আদেশবলে (পিও-১৬/৭২) বাড়িটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। ১৯৭৩ সালে বাড়িটি গণপূর্তের গেজেটভুক্ত হয়। এরপর ওই বাড়ির এক সময়ের কেয়ারটেকার কেপি আজগার আলী এর মালিকানা দাবি করে হাই কোর্টে রিট (নম্বর ২৫১/১৯৭৩) করেন। ১৯৭৬ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি হাই কোর্ট বিভাগের রায়ে এটি পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত নয় মর্মে ঘোষণা করা হয়। সাধারণত এ ধরনের রায়ের বিরুদ্ধে পূর্ত মন্ত্রণালয় আপিল করে থাকে। কিন্তু রহস্যজনক কারণে এই রিটের ক্ষেত্রে তা করা হয়নি। বরং ১৯৮৬ ও ’৮৮ সালে পূর্ত মন্ত্রণালয়ের গেজেটে পরিত্যক্ত তালিকায় এই বাড়িটির নাম ওঠানো হয়নি।

রাজউকের এস্টেট শাখা সূত্র জানায়, গত বছরের ২ আগস্ট রাজউকে জমিটির বণ্টননামা রেকর্ড এন্ট্রি হয়, যার ক্রমিক নম্বর ২৯। বণ্টননামা সূত্রে নামজারির চূড়ান্ত পত্র জারি হয় একই বছরের ১৭ অক্টোবর।

সর্বশেষ খবর