সোমবার, ১০ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

কমছে মসলাজাতীয় পণ্যের ঝাঁজ

কারসাজি সিন্ডিকেটের নতুন কৌশল

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

কমছে মসলাজাতীয় পণ্যের ঝাঁজ

দেশের অন্যতম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে কমছে মসলাজাতীয় পণ্যের ঝাঁজ। পবিত্র কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে কয়েক মাস আগেই কৌশলে দফায় দফায় বাড়ানো হয়েছে মসলাজাতীয় পণ্যের দাম। ফলে বিগত যে কোনো সময়ের চেয়ে মসলাজাতীয় পণ্যের দাম পৌঁছেছে সর্বোচ্চ পর্যায়ে। কোরবানি ঘনিয়ে এলে প্রশাসনের মনিটরিং এড়াতে ওই কৌশলের অংশ হিসেবে এখন ধীরে ধীরে কমনো হচ্ছে দাম। যাতে স্বাভাবিক চোখে মনে হয় মৌসুমে কমছে মসলার দাম।

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে মসলাজাতীয় পণ্য পর্যাপ্ত আমদানি হয়েছে। সরবরাহ চেইন ঠিক রয়েছে। কিন্তু প্রত্যাশিত বেচাবিক্রি নেই চাক্তাই খাতুনগঞ্জে। পণ্যের দামও কমছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে খাতুনগঞ্জের একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, প্রশাসনের কড়া মনিটরিং এড়াতে নতুন কৌশল অবলম্বন করছে আমদানিকারকরা। মৌসুম শুরুর কয়েক মাস আগে দফায় দফায় বাড়ানো হয়েছে পণ্যের দাম। এতে কোরবানির বেচাবিক্রি শুরু হওয়ার  আগেই মসলাজাতীয় পণ্যের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে চলে যায়। এখন কৌশলের অংশ হিসেবে পর্যায়ক্রমে কমানো হচ্ছে পণ্যের দাম। যাতে সাধারণ চোখে মনে হয় মসলাজাতীয় পণ্যের দাম বাড়েনি, বরং কমছে।

দেশের অন্যতম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে গতকাল ভারতীয় জিরার কেজি বিক্রি হয়েছে ৬৬০ টাকা। তুরস্কের জিরা বিক্রি হয়েছে ৮০০ টাকা কেজি। মিষ্টি জিরার কেজি বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকায়। লবঙ্গের কেজি ১ হাজার ৩৫০ টাকা। চীন থেকে আমদানি করা দারুচিনি বিক্রি হয়েছে ৩৭৫ টাকা, ভিয়েতনামের দারুচিনি ৪৪০ টাকা। গুয়েতেমালার এলাচের কেজি ৩ হাজার টাকা, ভারতের এলাচ ৩ হাজার ৩৫০ টাকা কেজি ধরে বিক্রি হয়েছে। হলুদের কেজি ২৭০ টাকা, কিশমিশ ৫১০ টাকা, রসুন ১৭৫ টাকা এবং পিঁয়াজ ৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। 

কোরবানির ঈদের কয়েক মাস আগে দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা জানান, মসলাকে বিলাসবহুল পণ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই মসলার শুল্কও দিতে হয় বেশি। পাশাপাশি ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন, নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশিতে ডলার কিনতে বাধ্য হওয়া, প্রত্যাশিত এলসি করতে না পারা, রপ্তানিকারী দেশগুলোয় বুকিং রেট বৃদ্ধি এবং পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে মসলাজাতীয় পণ্যের দাম বেড়েছে অনেক। তাই দফায় দফায় বাড়ানো হয়েছে মসলাজাতীয় পণ্যের দাম।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের তথ্যমতে, পবিত্র কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে মরিচ, পিঁয়াজ, রসুন, দারুচিনি, লবঙ্গ, জায়ফল, জয়ত্রী, এলাচ, ধনিয়া, জিরা, আদা ও হলুদ আমদানি করা হয়ে থাকে। চলতি বছর কোরবানিকে সামনে রেখে প্রায় ১ লাখ ৮২ হাজার টন মসলাজাতীয় পণ্য আমদানি হয়। গত বছর যা ছিল ১ লাখ ৫১ হাজার ৯৩৩ টন। গত বছরের চেয়ে এবার প্রায় ৩০ হাজার টন বেশি মসলাজাতীয় পণ্য আমদানি হয়েছে।

 

সর্বশেষ খবর