সোমবার, ৯ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

ছদ্মবেশে ছেলেধরা চক্র টার্গেট স্কুলপড়ুয়া শিশু

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

বরিশালে ছদ্মবেশে বিচরণ করছে ছেলেধরা চক্র। এদের টার্গেট স্কুলপড়ুয়া শিশু। গত ২৬ ও ৩১ অক্টোবর বরিশাল নগরী এবং মুলাদী উপজেলা থেকে নিখোঁজ হয় দুই শিশু। তাদের পরিবারের কাছে বার বার ফোন করে দাবি করা হচ্ছে মুক্তিপণ। তবে চক্রটি একেক সময় একেক মোবাইল নম্বর থেকে ফোন দেওয়ায় গতকাল পর্যন্ত শিশু দুটিকে উদ্ধার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

২৬ অক্টোর থেকে নিখোঁজ নগরীর বাংলাবাজার ডা. খাদেম হোসেন সড়কের বাসিন্দা মিজানুর রহমান ও নুরুন্নাহার দম্পতির একমাত্র ছেলে জিহাদ (১১)। এ ঘটনায় ২৮ অক্টোবর কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। নুরুন্নাহার জানান, অপরিচিত একেক নম্বর থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তার ছেলের মুক্তির জন্য বিকাশ নম্বরে তিন লাখ টাকা দাবি করেছে। বাবা মিজানুর রহমান জানান, জিহাদের অসুস্থতার কথা বলে একটি বিকাশ নম্বরে দুই হাজার টাকা নিয়েছে অপরাধী চক্র। তাদের তিন লাখ টাকা দিতে রাজি হলেও চক্রটি বাবা-মায়ের সঙ্গে শিশুটিকে কথা বলিয়ে দেয়নি। থানায় জিডি করলেও কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় হতাশ স্বজনরা। এদিকে মুলাদী উপজেলা শহরের দক্ষিণ কাজীর চর এলাকার বাসিন্দা মনির সিকদার ও চিনু বেগম দম্পতির একমাত্র ছেলে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র ভুবন সিকদার নিকোঁজ হয় ৩১ অক্টোবর। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার মুলাদী থানায় জিডি করলেও এখনো কোনো অগ্রগতি হয়নি। ভুবনের বাবা জানান, শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টায় ০১৭৮৯৭৩৫৭৫৭ নম্বর থেকে তার মুঠোফোনে কল করে ছেলের মুক্তির জন্য তিন লাখ টাকা দাবি করে অজ্ঞাতরা। শনিবার সকালে চক্রটি ০১৭২২২৯৩৫৪৪ নম্বর থেকে ফোন করে ভুবনকে পাঁচারের সময় মাইক্রোবাস থেকে উদ্ধার করতে গিয়ে মারাত্মক জখম হয়েছে জানিয়ে দ্রুত ১০ হাজার টাকা বিকাশ করতে বলে। তাৎক্ষণিক ০১৭২৫৪৪২১১১ নম্বরে তিন হাজার টাকা পাঠিয়ে দেন। কিছুক্ষণ পর ০১৮৬৬৯২৩৮০৭ নম্বর থেকে একই বিকাশ নম্বরে আরো ১০ হাজার টাকা পাঠাতে বলে অপরাধী চক্র। পুলিশ জানায়, দুই শিশুর পরিবারের কাছে যেসব মুঠোফোন নম্বর দিয়ে ফোন করা হচ্ছে, সেগুলো একই। একই চক্র দুটি শিশু অপহরন করে মুক্তিপণ দাবি করছে। এই চক্র ছদ্মবেশে বিভিন্ন জায়গায় বিচরণ করছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ। বরিশাল জেলা পুলিশের অতিরিক্ত সুপার আনিছুর রহমান এবং মেট্রোপলিটন পুলিশের মূখপাত্র সহকারী কমিশনার (গোয়েন্দা) আবু সাঈদ জানান, থানায় করা জিডির সূত্র ধরে তারা অগ্রসর হচ্ছেন। প্রযুক্তি ব্যবহার করে পুলিশ দ্রুত দুই শিশুকে উদ্ধার এবং অপরাধী চক্রকে আটক করতে সক্ষম হবে বলে জানিয়েছেন এই দুই কর্মকর্তা।

সর্বশেষ খবর