শুক্রবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

ফসলি জমিতে ইটভাটা দেদার পুড়ছে কাঠ

মাদারীপুর প্রতিনিধি

আইন লঙ্ঘন করে মাদারীপুরের বিভিন্ন স্থানে ফসলি জমিতে গড়ে উঠেছে ইটভাটা। এসব ভাটায় ইট পোড়ানোর কাজে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে কাঠ। প্রকাশ্যে কাঠ পোড়ানো হলেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এতে হুমকির মুখে পড়েছে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য। সরকারের নির্দেশ রয়েছে, আবাদি জমিতে কোনোভাবেই ইটভাটা নির্মাণ করা যাবে না এবং ভাটায় পোড়ানো যাবে না কাঠ। কিন্তু ভাটামালিকরা মানছেন না সরকারের এ নির্দেশনা। পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের আইনে ইটভাটা স্থাপনের জন্য কয়েকটি নির্দেশনা রয়েছে। এগুলো হল- ভাটা স্থাপনের জন্য অনাবাদি জমি ব্যবহার করতে হবে। জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করতে হবে কয়লা। নির্দিষ্ট মাপের চিমনি ব্যবহার ও জনবহুল এলাকা থেকে নির্দিষ্ট দূরত্বে ইটভাটা স্থাপন করতে হবে। এ ছাড়া ইট পোড়ানোর কাজে কাঠ ব্যবহার করলে তিন বছরের কারাদণ্ড, অনধিক তিন লাখ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। মাদারীপুর সদর উপজেলার পাচখোলা গ্রামে আবাদি জমিতে গড়ে উঠা একটি ভাটায় গিয়ে দেখা যায় কাঠের স্তূপ। কাঠ নিয়ে ভাটার চুল্লিতে ফেলছেন শ্রমিকরা। এর পাশে আরেকটি ভাটায় গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে জিগজ্যাগ চিমনিতে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। একইভাবে ফসলি জমিতে ইটভাটা স্থাপন করেছেন আরো অনেকে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে  ভাটার শ্রমিকরা জানান, নিয়ম অনুযায়ী কয়লা দিয়ে ইট পোড়ানোর কথা থাকলেও পোড়া হচ্ছে কাঠ। এছাড়া এ ভাটাগুলো স্থাপন করা হয়েছে আবাদি জমিতে। ইট তৈরির মাটি আনা হচ্ছে আবাদি জমির উপরি ভাগ থেকে। একাধিক কৃষক জানান, ভাটামালিকরা অনেকটা জোর করেই তাদের আবাদি জমি কেটে নিচ্ছেন। এভাবে ইটভাটায় ফসলি জমি চলে গেলে কৃষি জমি হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তারা। সরজমিনে জানা গেছে, ধোঁয়ার সঙ্গে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পোড়া কাঠের টুকরো ও ছাই ভাটার আশপশের আবাদি জমিতে পড়ছে। এতে প্রতিবছর ওই সব জমির আবাদ নষ্ট হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষক। তারা প্রতিবাদ করেও কোনো সুফল পাননি। সদর উপজেলার পাচখোলা গ্রামের কৃষক এলেম ফকির জানান, ভাটার কাছেই তার তিন বিঘা জমি। অনেক দিন তিনি এ জমি আবাদ করতে পারছেন না। জমি থেকে জোর করে ভাটামালিক শ্রমিক দিয়ে মাটি কেটে নিচ্ছেন। মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, আবাদি জমিতে ইটভাটা করার সরকারি নিয়ম নেই। সরজমিনে খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর