শিরোনাম
শনিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

বই পায়নি ১০৩ আনন্দ স্কুলের শিক্ষার্থীরা

দিনাজপুর

দিনাজপুর প্রতিনিধি

বই পায়নি ১০৩ আনন্দ স্কুলের শিক্ষার্থীরা

আনন্দ স্কুলের কমলমতি শিক্ষার্থী —বাংলাদেশ প্রতিদিন

নুতন বছরে নবীন শিক্ষার্থীরা বই উৎসবে মেতে উঠলেও ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের শিক্ষাগ্রহণ নিশ্চিত করতে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে ১০৩টি আনন্দ স্কুলের শিক্ষার্থীরা গতকাল পর্যন্ত বই পায়নি।

আনন্দ স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির কয়েকশ ছাত্র-ছাত্রী ও শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকা ৩ জানুয়ারি পার্বতীপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে বইয়ের জন্য ভিড় করে। কিন্তু বই দেওয়া হয়নি। এ সময় পার্বতীপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বিষয়টি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করে সমাধান করার আশ্বাস দিলে দুঘণ্টা অবস্থানের পর তারা উপজেলা চত্বর ত্যাগ করেন। জানা গেছে, স্কুলের ঝরেপড়া শিক্ষার্থীদের শিক্ষাগ্রহণ নিশ্চিত করতে ২০০৫ সালে সারা দেশের ৪০টি উপজেলার সঙ্গে পার্বতীপুর উপজেলায় রস্ক (রিচ আউট অব স্কুল চিল্ড্রেন) প্রকল্পের আওতায় পার্বতীপুরে ৩৩৭টি আনন্দ স্কুল চালু করা হয়। ২০১৫ সালের ৫ম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষায় এসব স্কুলের ৫২৬ জন শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণের মধ্যদিয়ে এ প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হয়। প্রকল্পটি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের আওতাধীন হলেও দেশের প্রতিষ্ঠিত বে-সরকারি সাহায্য সংস্থা (এনজিও) এসব স্কুল মনিটরিংয়ে দায়িত্ব পায়। রস্ক প্রকল্পের আওতায় প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০১৩ সালে দেশের ১৮০টি উপজেলার সঙ্গে পার্বতীপুর উপজেলার গ্রামাঞ্চলে আরও ১০৩টি আনন্দ স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০১৪ সালে শুরু হওয়া শিক্ষাবর্ষে এসব স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আগের মতোই স্কুল ঘর, বই খাতা, পোশাক, শিক্ষা উপকরণ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদেরও মাসিক ভাতা প্রদান করা হয়।

২০১৫ সালে শিক্ষার্থীরা বই খাতা ও পোশাক পেলেও শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাসিক ভাতা বন্ধ হয়ে যায়। এতে ১০৩ আনন্দ স্কুলের প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থী ও ১০৩ শিক্ষক-শিক্ষিকা চরম আর্থিক সংকটের মধ্যেও স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম চালু রেখেছেন। ২০১৬ সালের শুরুতে প্রাথমিক স্কুলের নবীন শিক্ষার্থীরা বই উৎসবে মেতে উঠলেও এ থেকে বঞ্চিত হন আনন্দ স্কুলগামী দরিদ্র পরিবারের প্রায় আড়াই হাজার শিশু শিক্ষার্থী। পার্বতীপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আখতারুল ইসলাম সাংবাদিকদের  বলেন, প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) ড. এম মিজানুর রহমান তাকে ফোনে এ প্রকল্পের কার্যক্রম আপাতত স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন। আনন্দ স্কুলের প্রশাসনিক ও অর্থ সংক্রান্ত কার্যক্রম মনিটরিং দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্রেনিং কো-অর্ডিনেটর (টিসি) শাজিদ আল মোহিত বলেন, প্রকল্প পরিচালক এর মৌখিক নির্দেশে এসব স্কুলের কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে। রস্ক প্রকল্পের (আরওএসসি) প্রকল্প পরিচালক (পিডি) ড. এম মিজানুর রহমান বলেন, স্কুল প্রতিষ্ঠা, শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় ও তদন্তের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রীর টেলিফোনিক নির্দেশে প্রকল্পের ২য় পর্যায়ের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর