কোনো ধরনের আর্থিক সহায়তা না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত পাবনার সজীব হোসেন। দুর্ঘটনার পর তিন বছরেও সব প্রমাণাদি থাকা সত্ত্বেও অজ্ঞাত কারণে অর্থ সহায়তা পাচ্ছেন না তিনি। যথাযথ চিকিৎসার অভাবে বর্তমানে দরিদ্র পরিবারের বোঝায় পরিণত হয়েছেন সজীব। পাবনার ফরিদপুর উপজেলার বিল বকরি গ্রামের সজীব ভাগ্য পরিবর্তনের স্বপ্ন নিয়ে কাজ নেন সাভারের রানা প্লাজার ইথারটেক্স গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিতে। ২০১৩ সালে ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজার ৬ষ্ঠ তলায় কর্মরত অবস্থায় তার জীবনের সব স্বপ্ন দুঃস্বপ্ন হয়ে ধসে পড়ে। নিকষ অন্ধকারে ইট কংক্রিটের মৃত্যুপুরীতে তিন ঘণ্টা আটকে থাকার পর স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু এনাম মেডিকেল ও সাভারের সিআরপিতে তিন মাস চিকিৎসার পরও দুর্ঘটনায় সম্পূর্ণ ভেঙে যাওয়া মেরুদণ্ডের হাড় স্বাভাবিক হয়নি। চিরতরেই পঙ্গুত্ব বরণ করেন সজীব।
দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় ২০১৩ সালের ৫ জুন প্রধানমন্ত্রীর দফতরে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে, সাক্ষাৎ হয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। সে দিন তাকে জানানো হয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে তাকে অনুদান দেওয়া হবে। খোলানো হয় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট। কিন্তু সেই অনুদানের টাকা আজও জমা হয়নি সেই ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। দিনাজপুরে ব্লাস্টের মানববন্ধন : দিনাজপুর প্রতিনিধি জানান, রানা প্লাজা ভয়াবহ দুর্ঘটনার ৩ বছরপূর্তি উপলক্ষে দিনাজপুর ইকবাল হাইস্কুলে ছাত্রছাত্রীরা মৃত শ্রমিকদের স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন শেষে স্কুল সম্মুখে সড়কে মানববন্ধন পালন করেছে। রবিবার বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) দিনাজপুর ইউনিট আয়োজনে এ মানববন্ধন করে। মানববন্ধনে সিডিসি রানা প্লাজার ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক উপকারভোগী মো. সাদ্দাম হোসেন ও মোফাজ্জল হোসেন রানা প্লাজায় কর্মরত থাকা অবস্থায় দুর্ঘটনার ঘটনা বর্ণনা করেন। মানববন্ধনে ব্লাস্ট দিনাজপুর ইউনিটের সমন্বয়কারী অ্যাড. সিরাজুম মুনিরা বলেন, বাংলাদেশের শ্রম আইনে যে পরিমাণ ক্ষতিপূরণের অর্থ নির্দিষ্ট করা আছে তা বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে ও বাস্তবতার নিরিখে যথাযথ নয়। রানা প্লাজায় দুর্ঘটনায় ৩ বছর হলে গেলেও নিহত ও আহত শ্রমিকের ক্ষতিপূরণ প্রদানে ন্যূনতম মানদণ্ড নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি।
