শিরোনাম
বুধবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

সিন্ডিকেটের কবলে শিক্ষক নিয়োগ

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জের তিন মাদ্রাসার তিন শিক্ষক বিভিন্ন মাদ্রাসায় দীর্ঘদিন ধরে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অর্থের বিনিময়ে গোপনে অবৈধভাবে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। সম্প্রতি চৌহালী মাদ্রাসার একজন কৃষি সহকারী শিক্ষক পদে গোপন প্রক্রিয়ায় সদর উপজেলার শ্যামপুর আলিয়া মাদ্রাসার নিয়োগ পরীক্ষা দেওয়ার সময় স্থানীয়দের কাছে হাতে-নাতে ধরা পড়ায় তাদের গোপন সিন্ডিকেটের তথ্য ফাঁস হয়ে যায়। এ নিয়ে জেলার অন্যান্য মাদ্রাসা শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ তিন শিক্ষক মাদ্রাসায় ক্লাস ফাঁকি দিয়ে সারাক্ষণ এ অবৈধকাজে লিপ্ত থাকেন বলেও সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসার অন্য শিক্ষকেরা জানিয়েছেন। সিন্ডিকেটের সদস্যরা হলেন— সদর উপজেলার শিয়ালকোল ইউনিয়নের শ্যামপুর আলিম মাদ্র্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল লতিফ, পৌর এলাকার খাতুনে জান্নাত দাখিল মাদ্রাসার মৌলভী শিক্ষক খায়রুল ইসলাম ও চৌহালী উপজেলার খাসকাউলিয়া দক্ষিণ জোতপাড়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার লুত্ফর রহমান। তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, সিন্ডিকেটের সদস্যরা জেলার যে কোনো মাদ্রাসায় শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরই সক্রিয় হয়ে ওঠেন। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশকারী মাদ্রাসা সুপারদের মোটা টাকার লোভ দেখায় এবং গোপনে সব কিছু ম্যানেজ করে শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা করে দিবেন বলে আশ্বস্ত করেন। পরে সিন্ডিকেটের সদস্যরা মূল প্রার্থী সিলেকশন এবং ডামি জোগাড় করেন। মূল প্রার্থীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকার চুক্তি করা হয়। নিয়োগের আগেই অর্ধেক টাকা নিয়ে যে মাদ্রাসার শিক্ষক নিয়োগ হবে সেই সুপারের কাছে উেকাচের অর্থ পর্যন্ত পৌছে দেন। এরপর গোপনে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে প্রলোভনসহ নানা ফন্দি করে ম্যানেজ করে ফেলেন। চাকরি হওয়ার পর নিয়োগকৃত শিক্ষকের কাছ থেকে বাকি টাকা নিয়ে তিনজন ভাগবাটোয়ারা করে নেন। এভাবে এই সিন্ডিকেট ইতোমধ্যে শ্যামপুর, জগতগাতী ও রাজিবপুরসহ বিভিন্ন মাদ্রাসায় অন্তত ডজন খানেক শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। সর্বশেষ ১৭ ডিসেম্বর গোপনে চৌহালীর জোতপাড়া মাদ্রাসার সহকারী কৃষি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা গোপনে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শ্যামপুর মাদ্রাসায় নেওয়ার সময় স্থানীয়দের কাছে ধরা পড়েন। পরে নিয়োগ বোর্ডের বড়কর্তা মাদ্রাসা বোর্ডের ডিজির প্রতিনিধি মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক জান্নাতুল নাহার তড়িঘড়ি করে পরীক্ষাটি বাতিল করে পালিয়ে যান। এ ঘটনার পর থেকেই সিন্ডিকেটের তিনজন বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় সাংবাদিকদের ম্যানেজ করতে উঠে পড়ে লেগেছেন।  এ বিষয়ে সিন্ডিকেটের সদস্য লুত্ফর রহমান, আব্দুল লতিফ ও খায়রুল আলম সব অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তাদের হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য মিথ্যা তথ্য দেওয়া হয়েছে। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. শফিউল্লাহ জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। কেউ অভিযোগ দিলে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর