সোমবার, ১ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

রংপুরে ব্লাস্ট রোগে কপাল পুড়ছে বোরো চাষির

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

রংপুরে ব্লাস্ট রোগে কপাল পুড়ছে বোরো চাষির

ব্লাস্ট রোগের আক্রমণে ধানের শীষ শুকিয়ে সাদা হয়ে গেছে। ছবিটি গতকাল রংপুর সিটি করপোরেশনের রাধাকৃষ্ণপুর এলাকা থেকে তোলা —বাংলাদেশ প্রতিদিন

অকাল বন্যায় যখন দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার কৃষক সর্বস্বান্ত হয়েছে। তখন রংপুরে বোরো খেতে ব্যাপকহারে ছত্রাক জাতীয় ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ দেখা দিয়েছে। খেতের পর খেতের ধানের শীষ শুকিয়ে সাদা হয়ে যাওয়ায় কপাল পুড়ছে বোরো চাষির। ওষুধ ছিটিয়েও খেতকে রক্ষা করতে পারছে না চাষিরা। এদিকে ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ থেকে বোরো খেত রক্ষায় জেলা, উপজেলা ও মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদের শুক্র ও শনিবারের ছুটি বাতিল করেছে কৃষি বিভাগ। কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক মাঠে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন। 

রংপুর সিটি করপোরেশনের রাধাকৃষ্ণপুর এলাকার কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ বছর দেড় একর জমিতে বোরো ধান আবাদ করচি। ৭-৮ দিন আগে হঠাৎ ধানগাছের পাতার রং কালা (কালো) হয়া শীষ শুকি সাদা হয় যায়। কৃষি অফিসার কইছে এটা নাকি ব্লাস্ট রোগ। অনেক ওষুধ দিচি, কোনো কাজ হয় নাই। ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বউ-ছাওয়া নিয়া কী খামো ভাবি পাইতুচি না।’ রংপুর সদর উপজেলার সদ্যপুস্করিণী ইউনিয়নের কেশবপুর এলাকার কৃষক মুকুল মিয়া বলেন, ‘এক একর জমিত বোরো ধান নাগাইছিলাম। ব্লাস্ট রোগ ধরি বেশির ভাগ খেতের ধান নষ্ট হয়া গেইচে।’ একই অবস্থা জেলার আট উপজেলাতেও বিরাজ করছে বলে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানিয়েছে। চলতি মৌসুমে জেলায় ১ লাখ ৩৩ হাজার ৪০ হেক্টর জমিতে বোরো চায় করা হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৫১ হাজার ৩২৭ মেট্রিক টন ধান। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক স ম আশরাফ আলী বলেন, ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত ধান ৮০ ভাগ পর্যন্ত ক্ষতি হয়। ধানের শীষ বের হওয়ার পর মেঘাচ্ছন্ন আকাশ, বাতাসের সঙ্গে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি, উচ্চ আর্দ্রতা, দিনে গরম ও রাতে ঠাণ্ডা আবহাওয়ার কারণে এ বছর বোরো ধান খেতে ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ দেখা দিয়েছে। এ রোগ ধানের শীষের গোড়া নষ্ট করে দেয়। ফলে শীষে গোড়ায় ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হচ্ছে। তবে গতকাল পর্যন্ত জেলার আট উপজেলায় এখন পর্যন্ত ৭৪ একর জমির ধান সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বলেন, জেলা, উপজেলা ও মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তাদের শুক্র ও শনিবারের ছুটি বাতিল করে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় থেকে কৃষকের মধ্যে লিফলেট ও ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত খেতে ছত্রাকনাশক ট্রুপার ছিটানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলেও জানান তিনি।

সর্বশেষ খবর