শনিবার, ১ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

ঝুড়ির গ্রাম দমদমা ও রাঘবাড়িয়া

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি


ঝুড়ির গ্রাম দমদমা ও রাঘবাড়িয়া

বাঁশের ঝুড়ি। আম-লিচু পরিবহনের মাধ্যম। আর এ ঝুড়ি তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার দমদমা ও রাঘবাড়িয়া গ্রামের প্রায় সাত হাজার পরিবার। গ্রামের শিশু থেকে শুরু করে সবাই এ কাজে জড়িত। তবে পুঁজি সংকট ও প্লাস্টিকের ঝুড়ির কারণে এর চাহিদা কমে যাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়ছেন এর সঙ্গে জড়িতরা। শিল্পটি টিকিয়ে রাখতে স্বল্প সুদে ঋণের দাবি করেছেন তারা। জানা যায়, প্রায় দেড়শ বছর ধরে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার পঞ্চক্রোশী ইউপির দমদমা ও রাঘবাড়ীয়া গ্রামে বাঁশের ঝুড়ি তৈরি করা হচ্ছে। গ্রামে ঢুকলেই দেখা যাবে শিশু-থেকে শুরু করে সব বয়সীরা ঝুড়ি তৈরি করছেন। কেউবা বাঁশ কাটছেন, কেউবা বেতি তুলছেন, আবার কেউ ঝুড়ি বুনন করছেন। তৈরি করা ঝুড়িগুলো রাজশাহী, নওগাঁ, রোহনপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ আম-লিচু এলাকায় চলে যাচ্ছে। কিন্তু আধুনিক যুগে প্লাস্টিকের ক্যারেট বা ঝুড়ি তৈরি হওয়ায় বাঁশের ঝুড়িতে বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ঝুড়ির কারিগর রাশিদা খাতুন, মরিয়ম খাতুন জানান, বাঁশ-বেত ও মজুরিসহ দিয়ে একটি ঝুড়ি তৈরি করতে প্রায় ১৫-২০ টাকা খরচ হয়। বিক্রি করা হয় প্রায় ২৫-৩০ টাকা। এতে দিনে প্রায় একজন কারিগর ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় হয়ে থাকে। কারিগর নীলুফার ও আব্দুল হান্নান জানান, অনেকের পুঁজি সংকট রয়েছে। কলেজ ছাত্র রুবেল জানান, অবসর সময়ে এ গ্রামের সব ছাত্র-ছাত্রীই ঝুড়ির কাজ করে পরিবারকে সহায়তা করে থাকে। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম ভুট্টো জানান, এক সময় বাবা-মার সঙ্গে আমিই ঝুড়ি তৈরি করতাম। দুটি গ্রামের শিশু থেকে শুরু যুবক-তরুণ-তরুণী বৃদ্ধ সবাই এ কাজের সঙ্গে জড়িত। বছরে প্রায় ১২-১৫ কোটি টাকার ঝুড়ি বেচাকেনা হয়। সরকার যদি স্বল্প সুদে কারিগরদের ঋণ সুবিধা দিত তাহলে শিল্পটি টিকে থাকত। উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সন্দ্বীপ কুমার সরকার জানান, ঝুড়ির কারিগরদের সহায়তা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হলেও তারা অনাগ্রহ প্রকাশ করায় সম্ভব হচ্ছে না। ঋণ দেবার ক্ষেত্রেও রয়েছে প্রতিবন্ধকতা। তারপরেও বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় ঋণ দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

 

সর্বশেষ খবর