বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

পুনর্বাসনবঞ্চিত তিন লাখ কৃষক

কুড়িগ্রামে বন্যায় কৃষিতে ক্ষতি ৪০০ কোটি টাকা

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

কুড়িগ্রামে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সোয়া তিন লাখ কৃষক এখনও পাননি সরকারি বা বেসরকারি কোনো কৃষি সহায়তা। চলতি বছর জেলায় দুই দফা বন্যায় কৃষি সমপ্রসারণ বিভাগের দেওয়া তথ্যমতে তিন লাখ ৪২ হাজার ৯৪০ কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ফসলহানির কারণে কৃষকের ক্ষতির পরিমাণ ৩৯২ কোটি ৯২ লাখ ১৭ হাজার ৯৫০ টাকা। এই বিপুল সংখ্যক ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের জন্য সরকারিভাবে দেওয়া হচ্ছে না পুনর্বাসন সুবিধা বা কৃষি প্রণোদনা। এ পর্যন্ত সহায়তা পেয়েছেন মোট কৃষকের মাত্র সাত দশমিক ৪৬ ভাগ। অর্থাৎ বৃহৎ অংশ এই সুফল থেকে বঞ্চিত। সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে এ জেলার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহযোগিতার কথা বলা হলেও বাস্তবে কোনো ধরনের সহায়তা পাচ্ছেন না ৯০ ভাগ কৃষক। কৃষি সমপ্রসারণ বিভাগ সূত্র জানায়, চলতি বছর বন্যায় কুড়িগ্রামে ৩৪ হাজার ৯২৭ হেক্টর রোপা আমন, ৫০৫ হেক্টর আমন বীজতলা ও এক হাজার ১৬১ হেক্টর সবজির ক্ষতি হয়। মাঠপর্যায়ে এ পর্যন্ত সরকারিভাবে মাত্র ২৫ হাজার ৬৯৯ কৃষককে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ৯টি উপজেলায় বরাদ্দ তালিকায় রয়েছেন আরও ২৪ হাজার ৬৯৯ কৃষক। এই পরিস্থিতিতে গ্রামগুলোতে চড়ামূল্যে কিনতে হচ্ছে রোপা আমন বীজ। কুড়িগ্রাম কৃষি সমপ্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মকবুল হোসেন জানান, সরকারিভাবে এখন পর্যন্ত ২৫ হাজার ৬৯৯ কৃষকের জন্য দুই কোটি ৮০ লাখ ৮০ হাজার ৯৯৮ টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। যা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের বরাদ্দ অনুযায়ী চেক বিতরণ করা হচ্ছে। সরকার কিছু কৃষককে সহযোগিতা করবে। তবে সবাই এ সুযোগ পাবে না। চিলমারীর চারা ব্যবসায়ী আব্দুল মিয়া জানান, বন্যায় বীজতলা নষ্ট হওয়ায় বিভিন্ন এলাকা থেকে চারা সংগ্রহ ও পরিবহন বাবদ অতিরিক্ত ব্যয় হয়। ফলে এক পণ (৮০ মুঠো) চারা আড়াই থেকে তিন হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। রমনা থেকে চারা কিনতে আসা জমসেদ বলেন, গরুর খড়ের কথা চিন্তা করে তিনি থানাহাট বাজারে আমন চারা কিনতে এসেছেন। কিন্তু চারার মূল্য শোনে ঘাবড়ে গেছেন। দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছেন চারা কিনবেন কিনা। একই কথা জানালেন চারা কিনতে আসা ভুট্টু মিয়া ও আব্দুর রশীদ। জানা যায়, চলতি বছর বন্যায় কুড়িগ্রামে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রন্ত হয়েছে চিলমারী, কুড়িগ্রাম সদর, রাজিবপুর, ভুরুঙ্গামারী, নাগেশ্বরী ও রৌমারী উপজেলার কৃষক। বন্যায় মাঠপর্যায়ে চাষ করা রোপা আমন, বীজতলা ও শাকসবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়।

সর্বশেষ খবর