শিরোনাম
মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
আমন খেতে পোকার আক্রমণ

‘কিছু’ পাওয়ার আশায় আক্রান্ত গাছে আগুন

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

‘কিছু’ পাওয়ার আশায় আক্রান্ত গাছে আগুন

সারা দেশে এখন ধান কাটার ধুম। চলছে নবান্ন উৎসবের প্রস্তুতি। এমন সময় গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গোদারচালা গ্রামের কৃষক আলতাফ হোসেনের চোখেমুখে বিষাদের ছায়া। কিভাবে সামনের দিনগুলো খেয়ে পড়ে বাঁচবেন তা ভেবে কূল-কিনারা পাচ্ছেন না। কারণ তার একমাত্র সম্বল চার বিঘা জমির আমন ধান পোকার আক্রমণে নষ্ট হয়ে গেছে। একাধিকবার কীটনাশক ছিটিয়েও ফসল রক্ষা করতে পারেননি। একই এলাকার আরেক কৃষক হুমায়ুন কবির জানান, পোকার আক্রমণ এত তীব্র যে ধান গাছ মরে খড়ে পরিণত হয়ে যায়। এ খড় গবাদিপশুও খায় না। কীটনাশক দিয়ে সামলাতে না পেরে অনেকে ভাল ধান গাছ থেকে কিছু পাওয়ার আশায় আক্রান্ত খেত পুড়িয়ে দিচ্ছেন। আলতাফ ও হুমায়ুনের মতো শ্রীপুরের অনেক কৃষক এবার ধান ঘরে তুলতে পারছেন না। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ২০ জন কৃষক জানিয়েছেন, তারা গড়ে চার বিঘা জমির ধান পুড়িয়ে দিয়েছেন। শ্রীপুর কৃষি অফিস জানায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার সাড়ে ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় এবং অতিবৃষ্টির কারণে ধান খেতে বিএলবি রোগ ও বাদামী ঘাস ফড়িংয়ের আক্রমণ হয়েছে। এ পোকা অতি দ্রুত ধান গাছে সংক্রামণ ঘটায়। তাত্ক্ষণিক ব্যবস্থা না নিলে রক্ষা পাওয়ার উপায় নেই। কৃষকরা জানান, শ্রীপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খেতে ধানের শীষ বের হওয়ার আগে ও পরে ব্যাপকভাবে এ রোগ দেখা দেয়। তাত্ক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিয়ে অনেকে ফসল রক্ষা করতে পেরেছেন। যেসব কৃষক ব্যবস্থা নিতে দেরি করে ফেলেছেন তাঁরা একাধিকবার কীটনাশক প্রয়োগ করেও ফল পাননি। শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুুয়ীদ উল হাসান বলেন, ‘১৫-২০ দিন আগেও হঠাৎ প্রচুর বৃষ্টি হয় পরে আবার গরম পড়ে। পরিবর্তিত আবহাওয়ার কারণে ধান গাছে পাতাপোড়াসহ বিভিন্ন রোগ বিস্তার করে’। তিনি জানান, এ ব্যাপারে কৃষকদের সতর্ক করতে ইউনিয়ন পর্যায়ে টিম গঠন করে করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যারা পরামর্শ মেনেছে তারা কিছুটা খেত রেহাই পেড়েছে। পরবর্তীতে যাতে ভাল খেতে পোকা আক্রমণ করতে না পারে সেজন্য আক্রান্ত গাছের অবিশিষ্টাংশে (খড়) আগুন দিয়েছে কৃষকরা।

 

সর্বশেষ খবর