সোমবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

অনিয়মই তাঁদের নিয়ম!

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

সৈয়দ নোমান, ময়মনসিংহ

অনিয়মই যেনো নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের (মমেক) কয়েকজন শিক্ষকের। নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে লাগামহীনভাবে তারা অফিস ফাঁকি দিচ্ছেন। এ সব শিক্ষকের কেউ সপ্তাহে এক-দু দিন আবার কেউ তিন দিন কর্মস্থলে আসেন। এতে মেডিকেল কলেজে শিক্ষা কার্যক্রম যেমন ব্যাহত হচ্ছে তেমনি হাসপাতালের চিকিৎসাসেবায়ও চরম বিঘ্ন ঘটছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বারবার কলেজ কর্তৃপক্ষকে তাগাদা দিলেও মিলছে না প্রতিকার। সপ্তাহজুড়ে সরেজমিনে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে অনুসন্ধানে গেলে উঠে আসে এমন অনিয়মের চিত্র। কিন্তু কলেজে প্রতিদিনই উপস্থিতির স্বাক্ষর আছে অনুপস্থিত চিকিৎসকদের। অধ্যাপকদের এমন ফাঁকিবাজিতে হতবাক সংশ্লিষ্ট অনেকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘স্যাররাই যদি এ রকম করেন তবে তাদের কাছ থেকে আমাদের কী শেখার আছে? বিভিন্ন বিভাগের কমপক্ষে আটজন শিক্ষক-চিকিৎসক আছেন যাদের বেশিরভাগ বিভিন্ন জেলা থেকে এসে সপ্তাহে হাতেগোনা কয়েকদিন ক্লাস ও চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন। অভিযোগ আছে, ওনারা কর্মস্থলে না থেকে বেসরকারি ক্লিনিকে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

জানা যায়, শিশু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শেখ আনিছুল হক ও ডা. রাকিবুল হাসান সপ্তাহে একদিন অফিস করেন। বাকি পাঁচ কার্যদিবস রাকিবুল ঢাকায় এবং আনিছুল ব্যক্তিগত চেম্বার করেন টাঙ্গাইলে। মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. ফজলুল হক এবং সহযোগী অধ্যাপক ডা. নূরে আলম খান আসেন ঢাকা থেকে। দুজনই শুধু শনি, সোম ও বুধবার অফিস করেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। বক্ষব্যাধি বিভাগের দুই সহযোগী অধ্যাপকের মধ্যে রয়েছে ভাল বোঝাপড়া। ওই বিভাগের ডা. জাহিদুল ইসলাম যেদিন আসেন সেদিন আসেন না ডা. আনিছুর রহমান। দুজনই অফিস করেন তিনদিন করে। আর হৃদরোগ বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক গোবিন্দ কান্তি কখন দেশে আর কখন বিদেশে থাকেন তা জানেন না ওই বিভাগের অনেকে। রক্তরোগ বিভাগের প্রধান ডা. সিরাজুল ইসলাম। তবে বাধ্য হয়ে এই বিভাগ চালাতে হয় সহযোগী অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমানের। কারণ বিভাগীয় প্রধানের দেখা মেলে না সপ্তাহে তিন দিনও। এদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অফিসে আসা না আসার মহড়া দিচ্ছেন দন্ত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নার্গিস আক্তার। অধ্যাপকদের এমন কর্মকাণ্ডে বিব্রত হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাছির উদ্দীন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘এ সব নিয়ে কলেজের অধ্যক্ষকে কয়েকবার মৌখিকভাবে জানিয়েছি। এখন পর্যন্ত কোনো সুরাহা হয়নি। মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘অফিস এলাকায় তারা থাকেন না বলেই অনেক সময় কর্মক্ষেত্রে তারা অনুপস্থিত থাকেন। তাদের তালিকা আমাদের কাছে আছে। খুব দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করা হবে’।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর