শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

বেহাল সড়কে ৩২ জেলার মানুষের ভোগান্তি

সংস্কার কাজের দরপত্রে অংশ নেয়নি ঠিকাদার

জহুরুল ইসলাম, কুষ্টিয়া

বেহাল সড়কে ৩২ জেলার মানুষের ভোগান্তি

ভাঙা সড়কের গর্তে আটকে প্রাণপণে ওঠার চেষ্টা করছে বাস —বাংলাদেশ প্রতিদিন

মার্চেও শুরু হচ্ছে না দেশের উত্তর ও দক্ষিণের সড়ক যোগাযোগের একমাত্র পথ কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী মহাসড়কের সংস্কার কাজ। এ সড়ক সংস্কারে চলতি মাসে দরপত্র আহ্বান করা হলেও কোনো ঠিকাদার তাতে অংশ নেননি। কাজের জন্য যে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তাতে সংস্কার সম্ভব নয় বলে কোনো ঠিকাদার এ কাজ করতে চাইছে না বলে জানা গেছে। ফলে গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কে জনদুর্ভোগ লাঘবের যে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল তা মাঝপথেই থেমে গেল। দেশের উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গের ৩২ জেলায় সরাসরি সড়ক যোগাযোগের এক মাত্র পথ এই কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী মহাসড়ক। সড়ক বিভাগের হিসাব মতে এ মহাসড়কে প্রতিদিন ১১ হাজারেও বেশি যানবাহন চলাচল করে। এ মহাসড়ক দুই বঙ্গের মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী মহাসড়ক কুষ্টিয়া অংশ সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সড়কের বড় বড় গর্ত খানাখন্দ। বিশেষ করে কুষ্টিয়া শহরের বারখাদা ত্রিমহোনী থেকে ভেড়ামারা ১১ মাইল পর্যন্ত ১৩-১৪ কিলোমিটার সড়কের অবস্থা খুবই নাজুক। এসব এলাকায় সড়কের প্রায় বেশিরভাগ কার্পেটিং ও ইট খোয়া উঠে গেছে। প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা, হচ্ছে প্রাণহানি। ইদানিং এ সড়কে ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে উঠেছে তীব্র যানজট। প্রতিদিন জরাজীর্ণ এ ১৩ কিলোমিটার সড়কে ৮-১০টি গাড়ি বিকল থাকে। এ কারণে প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজট হয় এ সড়কে। জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্র জানায়, আগামী মার্চ মাসে এ সড়কে সংস্কার কাজ শুরু করার লক্ষ্যে চলতি মাসের গোড়ার দিকে ২৩ কোটি টাকা ব্যয় ধরে দরপত্র আহ্বান করা হয়। তবে ১২ ফেব্রুয়ারি দরপত্র জমার বাক্স খুলে দেখা যায় কোনো দরপত্র জমা পড়েনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের এক প্রকৌশলী জানান, কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী মহাসড়কের প্রায় ১৩ কিলোমিটার সড়কের অবস্থা খুব খারাপ। এ ১৩ কিলোমিটার সড়ক পুনঃনির্মাণ ছাড়া কোনো উপায় নেই। তাই যে টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে সড়কটি সংস্কারে তার দ্বিগুণ টাকা দরকার। যে টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা দিয়ে সড়ক সংস্কার সম্ভব নয়। এ কারণে কোনো ঠিকাদার দরপত্রে অংশ নেননি। সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে আরও জানা গেছে গত ২ বছরে কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী ও কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়ক সংস্কারে প্রায় ২৫ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। সর্বশেষ গত কয়েক মাস আগেও এ দুটি মহাসড়ক সংস্কার করা হয়। এছাড়া জরুরি মেরামতের কাজ সারা বছর লেগেই আছে। কুষ্টিয়া জেলা সচেতন নাগরিক কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান লাকী বলেন,‘টেন্ডার হয়, কাজ হয় কিন্তু সড়কের চেহারার পরিবর্তন হয় না। কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, এ বছর অতি বৃষ্টিতে মহাসড়ক দুটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চলতি মাসে এ সড়ক সংস্কারে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। তবে এতে কোনো ঠিকাদার অংশ নেননি। এ কারণে পুনরায় দপত্র আহ্বান করা হয়েছে। আশা করা যায় খুব শিগগিরই সড়ক মেরামতের কাজ শুরু হবে।

সর্বশেষ খবর