শনিবার, ৩১ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা
মাদারীপুর

‘ডিলার সিন্ডিকেটে’ জিম্মি কৃষক চড়া দামে কিনছেন সার

মাদারীপুর প্রতিনিধি

মাদারীপুরে ‘ডিলারদের ‘সিন্ডিকেটের’ কারণে জিম্মি হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। অভিযোগ রয়েছে ডিলাররা তাদের ইচ্ছামতো কৃষকদের অতিরিক্ত টাকায় সার কিনতে বাধ্য করছেন। এ জন্য কর্তৃপক্ষের মনিটরিং না থাকাকে দায়ী করছেন ভুক্তভোগীরা। জানা যায়, নিয়ম মেনেই মাদারীপুরের প্রতিটি ইউনিয়নে একজন করে ডিলার নিয়োগ দেওয়া আছে। শর্ত রয়েছে, ওই সব ডিলার স্ব স্ব ইউনিয়নে ব্যবসা পরিচালনা করবেন। অথচ অধিকাংশ সার ডিলার ব্যবসা পরিচালনা করছেন পৌরসভার মধ্যে। এছাড়া সরকার নির্ধারিত মূল্যে সার কিনতে পারছেন না মাদারীপুরের কৃষকরা। ডিলারদের সিন্ডিকেটের ফলে চড়া দামে সার কিনতে বাধ্য হচ্ছে তারা। চলতি ইবি-বোরো মৌসুমে অধিকমূল্যে সার কেনার ফলে লোকসানের মুখে পড়ার আশঙ্কা জেলার লক্ষাধিক কৃষকেদের। তবে, সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্তা ব্যক্তিরা এ সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। মাদারীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক জিএসএ গফুর বলেন, ‘এই জেলায় ৬৩ জন মূল ডিলারের মাধ্যমে ৫৬৭ জন সাব ডিলার প্রান্তিক কৃষকদের সার-বীজ দেওয়ার জন্য নির্ধারিত রয়েছেন। কেউ অনিয়ম করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযুক্ত ডিলারদের দাবি, যানবাহনের অধিক খরচের কারণে শহরের গোডাউন রেখে সার ও বীজ বিক্রি করছেন তারা। মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ও সার-বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতি ওহিদুল ইসলাম বলেন, ডিলারদের এ সব অবৈধ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যে সব ডিলার শহরে ব্যবসা করছেন তাদের স্ব স্ব ইউনিয়নে গিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করতে বাধ্য করা হবে। এছাড়া অধিকমূল্যে সার বিক্রয়কারীদের আইনের আওতায় আনা হবে। সরেজমিনে দেখা যায়, মাদারীপুর পুরান বাজারে রয়েছে একাধিক ইউনিয়নের সারের ডিলার। এছাড়া শহরের চরমুগরিয়ায় একই গোডাউনে পরিচালিত হচ্ছে দুটি ইউনিয়নের ডিলারের ব্যবসা। অথচ ওই ডিলারদের সদর উপজেলার পেয়ারপুর ও দুধখালি নিজ ইউনিয়নে গোডাউন রেখে প্রান্তিক কৃষকদের কাছে সার বিক্রির কথা। এ সব ইউনিয়নের কৃষকরা পরিবহন খরচ আর বেশি মূল্যের কারণে এলাকার পাইকার ও খুচরা দোকান থেকে চড়াদামে সার কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। পাচখোলা ইউনিয়নের কৃষক রাজ্জাক বলেন, ‘আমাদের এলাকায় সারের কোনো ডিলার আছে কিনা জানা নেই। আমরা শহর থেকে সার কিনতে বাধ্য হচ্ছি। এলাকায় সার বিক্রি করলে পরিবহন খরচ কমতো এবং সময় বাচতো।’ মস্তফাপুর ইউনিয়নের শাহআলম বলেন, ‘আমরা প্রতিকেজি সার ২০ টাকা দরে কিনছি। অথচ সরকার নির্ধারিত মূল্য ১৬ টাকা।’ দুধখালি ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান হিরু বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের ডিলার সার বিক্রি করে না। সার বিক্রি হয় শহরে। এতে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’

সর্বশেষ খবর