রবিবার, ২৯ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

দেড় মণ ধানে একজন শ্রমিক!

কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লায় কৃষি শ্রমিকের মজুরির ঊর্ধ্বগতিতে নাভিশ্বাস উঠেছে কৃষকদের। এক মণ ধানের বাজার দর ৫০০ টাকা হলেও দিনে একজন শ্রমিককে তিনবেলা খাবারসহ দিতে হয় ৮০০ টাকা। অর্থাৎ দেড় মণ ধানেও মিলছে না একজন শ্রমিক। এ কারণে বাম্পার ফলন হলেও গোলায় ধান ভরতে হিমশিম খাচ্ছেন কৃষকরা। কৃষি শ্রমিকের বাড়তি মজুরির কারণে বেশিরভাগ কৃষক পরিবারের সদস্যরা নিজেরা মাঠে ধান সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কুমিল্লা সদর, সদর দক্ষিণ, লাকসাম, মনোহরগঞ্জ, বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়াসহ অন্য উপজেলায় ঘুরে ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ বছর বোরো ধানের ভাল ফলন হলেও স্বস্তিতে নেই চাষিরা। এর অন্যতম কারণ কৃষি শ্রমিকের অতি মাত্রায় মজুরি বৃদ্ধি। ব্রাহ্মণপাড়ার শশীদল এলাকার জামাল মিয়া জানান, তিনি ২০০ শতক জমিতে ধান চাষ করেছেন। বীজ সার, সেচ, রোপণের সময় কৃষি মজুরি মিলিয়ে প্রায় ২২ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। এখন ধান গোলায় তুলবেন, সে উপায় নেই। কৃষি শ্রমিকের মজুরি উর্বধগতির কারণে দিশাহারা তিনি। কৃষক মন্তাজ খরচ বাঁচাতে তিন ছেলে ও ছোট ভাইকে নিয়ে মাঠে ধান সংগ্রহে নেমেছেন। ধা কাটতে কাটতে তিনি বলেন, ‘একজন কামলারে দিনে তিনবেলা ভাত খাওইয়া লগে বিড়ি দিয়া দিন শেষ হইলেই ৭০০ টাকা দিতে হয়। বাজারে ধানের দর দেখলে আর খেত করতাম মনে চায় না। অহন বাজারে এক মুণ ধান ৫০০ টেহায় বিক্রি করণ লাগে।’

লাকসামের উপজেলার মানপাল গ্রামের কৃষক দেলোয়ার হোসেন জানান, ধান ভালো হইছে মনটা ভালো ছিলো। কিন্তু কাজের লোকে যে টাকা চায় তা চিন্তা করলে মনডা আর ভালা থাহে না। এখন জেলার ষাট হাজারেরও অধিক কৃষক আশায় বুক বেঁধে আছেন সরকার যদি ন্যায্যমূল্যে ধান সংগ্রহ করে তবে তারা স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পারবেন। ন্যায্যমূল্যে ধান-চাল সংগ্রহের বিষয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ফারুক হোসেন জানান, সরকার থেকে বলা হয়েছে কেজি ২৬ টাকা দরে ধান ও ৩৮ টাকা দরে চাল সংগ্রহ করার। কি পরিমাণ ধান-চাল সংগ্রহ করবে এমন প্রশ্নের জবাবে খাদ্য নিয়ন্ত্রক জানান, কুমিল্লা থেকে ১৪ হাজার ৪২ মেট্রিক টন চাল ক্রয় করবে সরকার। তবে কি পরিমাণে ধান সংগ্রহ করা হবে সে ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত আসেনি। 

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর