বুধবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা
নড়িয়া ও জাজিরা

ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ২১ লাখ গাছ

শরীয়তপুর প্রতিনিধি

শরীয়তপুরের নড়িয়া ও জাজিরায় পদ্মার ভাঙনে গত তিন মাসে গৃহহীন হয়েছে সাড়ে ছয় হাজার পরিবার। জাজিরার কুণ্ডেরচর থেকে নড়িয়ার সুরেশ্বর পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার এলাকা পড়েছে ভাঙনের কবলে। বিলীন হয়ে গেছে অসংখ্য গাছপালা। যে সব এলাকা এখনও ভাঙেনি ভয়ে কেটে নেওয়া হচ্ছে ওইসব এলাকার গাছ। বন বিভাগের হিসাব অনুযায়ী পদ্মার ভাঙনে ২৪ বর্গ কিলোমটার এলাকার গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই জায়গায় বিভিন্ন প্রজাতির অন্তত সাড়ে ২১ লাখ গাছ ছিল।

শরীয়তপুর সরকারি কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের প্রধান আব্দুস সোবহান বাবুল বলেন, ‘জনপথ নষ্ট হলে গাছপালাও হারিয়ে যায়। গাছের সঙ্গে বন্যপ্রাণী ও পাখির নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। গাছ কমে গেলে জীববৈচিত্র্যরও হানি ঘটে। নদীভাঙনের কারণে গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কয়েক লাখ পাখি আবাসস্থল হারিয়েছে। নড়িয়ার উত্তর কেদারপুর গ্রামের সিরাজ জাদ্দারের দুই একর জমির উপরে একটি বাগান রয়েছে। ভাঙনের হুমকিতে গত শনিবার তিনি ওই বাগানের ৮০০ গাছ বিক্রি করে দিয়েছেন। সিরাজ বলেন, তার বসতবাড়িতে দুই শতাধিক ফলদ ও ওষধি গাছ ছিল। বাড়ির সঙ্গে তা পদ্মায় চলে গেছে। বাগান থেকে নদীর দূরত্ব ২০ মিটার। যে কোনো সময় বাগানটি বিলীন হওয়ার আশঙ্কায় বাধ্য হয়ে সব গাছ বিক্রি করে দিয়েছি।

নড়িয়ার ভোজেশ্বর এলাকার জ্বালানি কাঠের ব্যবসায়ী মজিবর তালুকদার বলেন, ভাঙন শুরু হলে এ এলাকার মানুষ বাড়িঘর সরানোর সঙ্গে সঙ্গে গাছ বিক্রি করতে শুরু করেছে। গত তিন মাসে আমি অন্তত ৩০ হাজার বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কিনেছি। শরীয়তপুর বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রণজিৎ চন্দ্র দাস বলেন, নদী ভাঙনে নড়িয়া ও জাজিরার লাখ লাখ গাছ নষ্ট হয়েছে। অনেক গাছ পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন আতঙ্কে মানুষ গাছ কেটে ফেলছে। ওই এলাকায় প্রতি একর ভূমিতে গড়ে ৩৬০টি বিভিন্ন প্রজাতির গাছ ছিল। ভাঙন থেমে গেলে এলাকাবাসীকে নতুন করে গাছ লাগাতে উদ্বুদ্ধ করা হবে।

সর্বশেষ খবর