সোমবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

পানি নিষ্কাশন বাধাগ্রস্ত ফসলহানির আশঙ্কা

টাঙ্গাইল ও নওগাঁ প্রতিনিধি

পানি নিষ্কাশন বাধাগ্রস্ত ফসলহানির আশঙ্কা

নওগাঁর রাণীনগরের রতনডারি খারি বন্ধ করে চলছে সেতু নির্মাণের কাজ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলায় দুটি খালের মুখ ভরাট করায় ছয় গ্রামের পাঁচ শতাধিক কৃষকের জমির ফসলহানির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বর্ষা মৌসুমে খেতের ধান কীভাবে রক্ষা করবেন এ চিন্তায় এখনই দিশেহারা কৃষকরা। সরেজমিন কালিহাতীর তারাবাড়ি গ্রামে দেখা যায়, স্থাপনা নির্মাণের জন্য দুটি খালের মুখে থাকা ব্যক্তিগত জমি এস্কাভেটর দিয়ে ভরাট করছেন স্থানীয় এক ব্যক্তি। এতে পানি নিষ্কাশন বাধাগ্রস্ত হয়ে নগরবাড়ি, মাইস্তা, তারাবাড়ি, তাতিহারা, পিচুরিয়া ও লুহুরিয়া গ্রামের পাঁচ শতাধিক কৃষকের জমিতে বর্ষার সময় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে। তখন হুমকির মুখে পড়বে কৃষকের কষ্টের ফসল। তারাবাড়ি গ্রামের কৃষক আবদুল মান্নান জানান, এভাবে খালের মুখে খেত ভরাট করলে আমার ১৫ বিঘা জমির আমন ধান পানিতে ডুবে যাবে। কৃষক আবদুল জলিল বলেন, খাল দিয়ে যে পরিমাণ পানি যায়, খেত ভরাট করায় অনেক কম পানি যাবে। ধান তো ডুবেই থাকবে। স্থানীয় নারান্দিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শুকুর মাহমুদ তালুকদার বলেন, কৃষকদের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। পানিপ্রবাহ নিশ্চিত করার পর জমি ভরাট করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ফসল উৎপাদন সুরক্ষিত করার লক্ষ্যে পানিপ্রবাহ নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহরিয়ার রহমান বলেন, বিষয়টি আমি অবগত নই। অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে নওগাঁর ঐতিহ্যবাহী রক্তদহ বিলে দীর্ঘদিন ধরে নিচু ও বিল সংলগ্ন এলাকার কয়েক হাজার বিঘা জমিতে স্থানীয়রা ইরি-বোরো ধান চাষ করে আসছে। জানা যায়, বর্ষা মৌসুমে এ বিলে প্রায় ২২টি খারি দিয়ে পানি প্রবেশ করে আর পানি বের হয় হাতেগোনা কয়েকটি খারি দিয়ে। দীর্ঘদিন খারিগুলো খনন না করায় মাটি জমে কোনোটি সরু হয়ে গেছে আবার কোনোটি দিয়ে পানি বেরই হয় না। এমন অবস্থায় বিল থেকে পানি বের হওয়ার প্রধান দুটি খারি হচ্ছে রতনডারী ও সিম্বা। কিন্তু রানীনগর-আবাদপুকুর সড়ক সংস্কার কাজ চলমান। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ শেষ করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে করোনাভাইরাসের প্রভাবে কাজ বন্ধ রয়েছে। রতনডারী ও সিম্বা খারি বন্ধ করে যে পার্শ্ব রাস্তা তৈরি করা হয়েছে সেখানে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়নি। ফলে আসন্ন বর্ষা মৌসুমের আগে এই দুই খারিসহ আরও ছোটখাটো কিছু খারির মুখ খুলে দেওয়া না হলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে কয়েক হাজার বিঘার ইরি-বোরো তলিয়ে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি ও নির্বাহী কর্মকর্তা আল মামুন বলেন, এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নওগাঁ সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হামিদুল হক বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে কাজ বন্ধ না থাকলে বর্ষা মৌসুমের আগেই ব্রিজ নির্মাণ শেষ হয়ে যেত। তবুও বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বলেছি।

সর্বশেষ খবর