সোমবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

খেতেই পাকা গম পুড়িয়ে ফেলছে কৃষক

নাটোর প্রতিনিধি

খেতেই পাকা গম পুড়িয়ে ফেলছে কৃষক

নাটোরের বাগাতিপাড়ায় পাকা গম খেতেই পুড়িয়ে ফেলছে কৃষকরা। তাদের দাবি, এবার গমের ভালো ফলন হয়নি। দানা সরু হওয়ায় বিঘাপ্রতি উৎপাদিত গম মাড়াইয়ের পর বিক্রি করে শ্রমিকের মজুরি উঠছে না। তাই তারা গম পুড়িয়ে ফেলছেন। তবে স্থানীয় কৃষিবিভাগের দাবি, এ বছর গমের ফলন ভালো হয়েছে। মওসুমের শেষ দিকে যারা চাষ করেছেন তাদের ফলন খারাপ হতে পারে।

স্থানীয় চাষিরা জানান, মাঠজুড়ে গম আবাদ দেখে তাদের চোখ জুড়িয়ে যায়। কিন্তু পাকার পর গমে দানা না হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। সাইলকোনা ছাড়াও উপজেলার জিগরী, বিলগোপালহাটি, যোগীপাড়া, মহজমপুর, শ্রীরামপুর, ডাকরমারিয়া, তমালতলা, জামনগর, ফাগুয়াড়দিয়াড়, মাধোববাড়িয়া, কালিকাপুর, রহিমানপুর ও দেবনগর গ্রামসহ কিছু গ্রামে এ সমস্যা হয়েছে বলে দাবি কৃষকদের। তবে আগাম গম বীজ বপনকারী চাষিদের ফলন কিছুটা ভালো হয়েছে বলেও জানান তারা। সাইলকোনা গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালাই। এ বছর এক বিঘা জমিতে গম বীজ বপন করেছিলাম। এতে প্রায় সাত হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু গমের দানা না হওয়ায় জমিতেই পুড়িয়ে ফেলতে হয়েছে। বর্তমানে করোনাভাইরাসের কারণে কাজ বন্ধ থাকায় পরিবার নিয়ে কীভাবে চলব ভেবে পাচ্ছি না। কাঁকফো গ্রামের আবুল কালাম, আবদুল লতিফ, কোয়ালিগাড়া গ্রামের সাদেক আলী, তকিনগর গ্রামের আতাহার জানান, মৌসুমের শুরুতে তেমন প্রাকৃতিক বিপর্যয় না হওয়ায় গমের গাছে মাঠ ভরে ওঠে। কিন্তু শীষ নিয়ে দাঁড়ানোর সময় তারা লক্ষ করেন গাছের মাজা ভেঙে পড়ে যাচ্ছে। তখন কীটনাশক ¯েপ্র করেও কাজে আসেনি। ফলে ওই সব জমিতে বিঘাপ্রতি ফলন হয়েছে দেড় থেকে তিন মণ। দানা খারাপ হওয়ায় যার বর্তমান বাজার মূল্য ১৫০০-২০০০ টাকা। অথচ গম কাটা ও মাড়াই খরচ দুই হাজার। আর বীজ বপন থেকে কাটার আগে পর্যন্ত বিঘাপ্রতি খরচ হয়েছে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার টাকা। ফলে প্রতি বিঘায় ছয়-সাত হাজার টাকা ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা। বাগাতিপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোমরেজ আলী বলেন, চলতি বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাগাতিপাড়ায় গমের ফলন ভালো হয়েছে। যেসব কৃষক নির্দিষ্ট সময়ের অনেক দেরিতে বীজ বপন করেছেন তাদের ফলন ভালো হয়নি। তবে এ সংখ্যা বেশি নয়।

সর্বশেষ খবর