শনিবার, ২০ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

নাটোর প্রতিনিধি

শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অনুমোদন ছাড়াই নাটোর সদর উপজেলার দরাপপুরে গড়ে তোলা হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। অভিযোগ উঠেছে, প্রতিষ্ঠানটি সাইনবোর্ড টানিয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে শুরু করেছে রমরমা নিয়োগ বাণিজ্য। প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধানের দাবি, নিয়ম মেনেই সবকিছু হচ্ছে। শিক্ষা বিভাগ বলছে এটি সম্পূর্ণ অবৈধ। নাটোর সদর উপজেলার দরাপপুরে কৃষি জমির মাঝখানে সম্প্রতি নির্মাণ করা হয়েছে টিনের চালার তৈরি বেশ কয়েকটি কক্ষ। সেখানে বিশাল সাইনবোর্ডে ২০১৭ সালে স্থাপিত মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ উল্লেখ করে সাইনবোর্ড ঝোলানো হয়েছে। এলাকাবাসী জানান, চলতি বছরই স্থাপন করা হয়েছে। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অনুমতি ছাড়া কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টেকনিক্যাল শব্দটি ব্যবহারের বিধান না থাকলেও কোনো অনুমোদন না নিয়েই রাতারাতি গড়ে তোলা হয়েছে এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত উল্লেখ করে মোটা অঙ্কের বেতন ও ভাতা প্রদানের নিশ্চয়তাসহ স্থানীয় পত্রিকায় জনবল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রতিষ্ঠানটি। ইতিমধ্যে ৭১ পদে আবেদন করেছে ৫ শতাধিক শিক্ষিত তরুণ-তরুণী। আবেদনের সঙ্গে পোস্টাল অর্ডার ও ব্যাংক ড্রাফট হিসেবে ৫ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ভুঁইফোড় প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেশ কয়েকটি পদে নিয়োগের নামে বেকার তরুণ-তরুণীর  কাছ থেকে ডোনেশন হিসেবে মোটা অঙ্কের টাকা হাাতিয়ে নিয়ে তৈরি করা  হচ্ছে পাকা ভবন।

প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ সোহেল রানা বলেন, বিধি মেনেই তাদের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। কোনো নিয়োগ বাণিজ্য হয়নি। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের কাগজপত্র প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন মাস্টারের কাছে রয়েছে। স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন জানান, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়েই প্রতিষ্ঠানটি করা হয়েছে। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অনুমোদনের প্রক্রিয়া চলছে। নিয়োগ বাণিজ্য করা হচ্ছে না। তিনি এ সময় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের কোনো কাগজ দেখাতে ব্যর্থ হন। নাটোর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রমজান আলী আকন্দ বলেন, মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের কোনো তথ্য জেলা শিক্ষা অফিসে সংরক্ষিত নেই। কোনো প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক, প্রভাষক নিয়োগের ক্ষেত্রে এটিআরসিএ কর্তৃক চাহিদা প্রদানপূর্বক এটিআরসিএ উক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সহকারী শিক্ষক বা প্রভাষক পদে নিয়োগ প্রদান করবে। কোনো ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডি কোনো নিয়োগ প্রদান করার ক্ষমতা রাখে না। সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘কথিত এ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়ে আমি তাদের অনুমোদন ছাড়া কার্যক্রম চালাতে নিষেধ করেছি। কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করতে হলে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অনুমতি ও কোড নম্বর প্রয়োজন হয়। অনুমোদন ছাড়া এভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে না। অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর