রবিবার, ২২ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

ট্রেনের ভরসা মই!

নাটোর প্রতিনিধি

ট্রেনের ভরসা মই!

ট্রেনে চড়ার ভরসা মই। নাটোরের মালঞ্চি, ইয়াছিনপুর ও বাসুদেবপুর রেল স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ হয়েছে কয়েক বছর আগে। মাস্টার ছাড়াই চলছে এসব স্টেশন। স্টেশনে ঝুলছে তালা। সিগন্যাল ছাড়াই এসব স্টেশনে বিরতি দিয়ে চলাচল করে ট্রেন। নাটোর ও আবদুলপুর স্টেশন থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয় সিগন্যাল। আন্তনগর ট্রেনগুলো দাঁড়ায় না এসব স্টেশনে। পার্বতীপুর থেকে খুলনাগামী রকেট মেইল ও রাজশাহীগামী উত্তরা এক্সপ্রেস নামের দুটি লোকাল ট্রেন থামে এসব স্টেশনে। পরে মই দিয়ে যাত্রী উঠিয়ে চলে যায়। ট্রেন দুটির নির্ধারিত সময় বেঁধে দেওয়া থাকলেও যাত্রীদের অপেক্ষা করতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। ট্রেনের আগমন জানতে লাইনের অদূরে তাকিয়ে থাকতে হয় যাত্রীদের। মাস্টার বা টিকিট কাউন্টার না থাকায় ট্রেনের ভিতরেই যাত্রীদের টিকিট সংগ্রহ করতে হয়। এসব স্টেশনে চারটি পৃথক রেলক্রসিংয়ের ব্যবস্থা থাকলেও ব্যবহারের উপযোগী লাইন মাত্র একটি। প্ল্যাটফরম থেকে দূরে। ফলে মই বা চা দোকানের বেঞ্চ পেতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনে ওঠানামা করতে হয় যাত্রীদের। এসব স্টেশনে ট্রেন ধরতে আসা যাত্রীদের ভোগান্তিসহ দুর্ভোগ এখন নিত্যসঙ্গী। বিশেষ করে ১৯২৭ সালে ব্রিটিশ সরকারের আমলে স্থাপিত বাগাতিপাড়া উপজেলা সদরের মালঞ্চি স্টেশন হয়ে সাধারণ যাত্রীদের অসহনীয় দুর্ভোগ নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। উপজেলা সদরের এই মালঞ্চি স্টেশন সংলগ্ন সরকারি অফিস আদালত ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠায় অনেকেই রেল পথে এসে অফিস করতেন। কিন্তু স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ায় সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এই উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ। বাগাতিপাড়া পৌরমেয়র মোশাররফ হোসেন বলেন, কাদিরাবাদ সেনানিবাস ও একটি আর্মি টেকনিক্যাল বিশ্বদ্যিালয়সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এই স্টেশনকে ঘিরে। কিন্তু পৌর এলাকার মালঞ্চি স্টেশনসহ বাগাতিপাড়া উপজেলার তিনটি স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ায় সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছেন এই উপজেলার মানুষ।

দুটি লোকাল ট্রেন এই মালঞ্চি স্টেশনে দাঁড়ালেও তা নিজের ইচ্ছায় চলাচল করে। যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয় স্টেশনে। আবার ট্রেন এসে থামে প্ল্যাটফরমের বাহিরের লাইনে। ফলে নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধী মানুষদের ট্রেনে উঠতে নামতে কষ্ট হয়। তিনি স্টেশনটি পূর্বের ন্যায় পুনরায় চালুর দাবি জানান। নাটোর রেল স্টেশনের স্টেশন মাস্টার অশোক কুমার চক্রবর্তী বলেন, জনবলের অভাবে এসব স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। মূলত লোকবল সংকটের কারণে স্টেশনটির এই দুরবস্থা। স্টেশনগুলো পুনরায় চালু করতে জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান তিনি। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির সদস্য এবং নাটোর-২ (সদর ও নলডাঙ্গা) আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল বলেন, বন্ধ স্টেশনগুলো চালুর জন্য সরকারের কাছে জানান হয়েছে। আশা করছি শিগগিরই সমস্যার সমাধান হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর