রবিবার, ২২ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

ঘুরে দাঁড়িয়েছেন সবুজপাড়াবাসী

বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সবজি চাষ, পালন করছেন হাঁস-মুরগি

খন্দকার একরামুল হক সম্রাট, কুড়িগ্রাম

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার সবুজপাড়া গ্রাম। চলতি বছর কয়েক দফা বন্যায় পুরো জেলার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এ গ্রামের মানুষ। বন্যা পরবর্তী সময়ে ধীরে ধীরে ক্ষতি কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন সবুজপাড়ার বাসিন্দারা।

দফায় দফায় বন্যায় নষ্ট হয়ে গেছে সবুজপাড়া গ্রামের মাঠের পর মাঠ ফসলের খেত। অনেকে ঘরে তুলতে পারেননি আমন ধান। এখন সেই মাঠে ও বাড়ির আঙিনায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ আবাদ করেছেন সবজি। পাশাপাশি অনেকে পালন করছেন হাঁস-মুরগি ও ভেড়া। দেখছেন ভাগ্য বদলানোর স্বপ্ন। সবুজপাড়াবাসীর এমন ঘুরে দাঁড়ানোর প্রচেষ্টা দেখে উৎসাহী হয়ে উঠছেন পাশের কয়েক গ্রামের শতাধিক মানুষ। সরেজমিনে জানা যায়, নদীবেষ্টিত ওই গ্রামের মানুষ প্রতি বছর বন্যার কবলে পড়েন। এবারের স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় কৃষকদের আমনের বীজতলা, মাঠের ফসল, বাড়ির চারপাশের শাক-সবজি ও হাঁস-মুরগির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নষ্ট হয়ে গেছে ঘরবাড়ি ও গবাদিপশুর খাদ্য। ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে গ্রামের ১৭০ পরিবারের লোকজন সংশ্লিষ্টদের পরামর্শে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখেন। সপ্ন বাস্তবায়নে তারা বাড়ি বাড়ি বিষমুক্ত সবজি চাষ, হাঁস-মুরগি ও ভেড়া পালনের কাজ করতে শুরু করেন। এতেই পাল্টে যেতে থাকে তাদের জীবনমান। সমষ্টিগতভাবে উদ্যোগে সবুজপাড়া গ্রাম এখন সবুজে পরিণত হয়েছে। তাছাড়া সবুজপাড়ার মানুষ নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সিন্ধান্ত নিয়েছে তাদের গ্রামে কোনো বাল্যবিয়ে হবে না। স্থানীয় গৃহবধূ আহিলা বেগম জানান, আমি বাড়ির আঙিনায় চাল কুমড়া লাগিয়েছি। ইতিমধ্যে চার হাজার টাকার কুমড়া বিক্রি করেছি। নিজেদের খাওয়ার পাশাপাশি কুমড়া বিক্রি করতে পেরে বেশ খুশি। তিনি আরও বলেন, একটি ভেড়া ৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে নিজের ঘর ঠিক করেছি। এখনো চারটি ভেড়া রয়েছে। একই গ্রামের আইয়ুব আলীর স্ত্রী ছবুরা ও আমিনুলের স্ত্রী রুবিনা জানান, নিজেদের তৈরি সার ও শুকনো নিমপাতা দিয়ে সবজি খেত পোকা ও বিষমুক্ত করেছেন তারা।

 কৃষকরা বলেন- এ বছর বন্যায় ফসল হারিয়ে বিপুল ক্ষতির শিকার হয়েছেন তারা। সবার ঐকান্তিক চেষ্টায় ক্ষতি কিছুটা কাটিয়ে উঠে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন।

সর্বশেষ খবর