শনিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

নদীর বুকে সবুজ বোরো খেত

বর্ষা মৌসুম এলেই নদী উপচে সৃষ্টি হয় বন্যার

খন্দকার একরামুল হক সম্রাট, কুড়িগ্রাম

নদীর বুকে সবুজ বোরো খেত

কুড়িগ্রামের ধরলা নদীর ব্রিজের নিচে শুকিয়ে গেছে পানি। সেখানে বোরো চাষ করছেন কৃষক -বাংলাদেশ প্রতিদিন

‘ধরলা নদীত পানিও নাই। মাছও নাই, এ্যালা শুধু ধু ধু করে বালা আর বালা। হামরাগুলা এ্যালা কন্টে যাই বা। আগত এইদন দিনে পানি দিয়া ভরি আছিল  হেই নদী। এ্যালা শুকি ঠনঠনা হইচে। আইজ প্রায় ৪০ বছর থাকি এই নদীত মাছ মারং। আগে অনেক পানি আছিল এখন পানিও নাই। মাছও নাই। কুড়িগ্রাম ধরলা নদী পাড়ের জেলে ষাটোর্ধ্ব মোকছেদ আলী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এ কথা বলেন। তার মতো আরও অর্ধশতাধিক জেলে যারা এভাবেই নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাদের এখন সবার একই অবস্থা। এক সময় ধরলা নদীতে চৈত্র-বৈশাখেও ছিল পানি। কিন্তু এখন বর্ষা মৌসুম শুরু হলেই নদী উপচে গিয়ে প্রবল বন্যার সৃষ্টি করে। গত বছর পরপর ৬বার বন্যার কবলে পড়ে এসব মানুষ। আর শুকনো  মৌসুম এলে তা দ্রুত শুকিয়ে যায়। বর্তমানে এখন ধরলা নদী গেছে শুকিয়ে। নদীতে তেমন পানিও নেই; আবার পর্যাপ্ত মাছও নেই। অন্যদিকে, নদীতে জেগে ওঠা চরে কৃষকরা লাগিয়েছেন বোরো ধান।  বোরো ধানে চরগুলো সবুজময় হয়ে উঠেছে। আর নদীতে পানি না থাকায় মাছের অভাবে নদীকেন্দ্রিক মানুষগুলো যেমন বেকার হয়ে পড়েছেন। তেমনি ধরলায় চরে কৃষকরা বোরো আবাদ করে ধান পাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। ধরলার শাখা নদী দুধ কুমার পাড়ের বাসিন্দা সাখাওয়াত হোসেনসহ সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের গারুহারা গ্রামে রয়েছে অনেক জেলে পরিবার। দিনভর মাছ ধরে তা বাজারে বিক্রি করে তাদের সংসার চলে। কিন্তু এখন তা আর তেমন নেই। ফলে অনেকেই বেকার জীবন যাপন করছেন। ধরলা পাড়ের বাসিন্দা সাইফুল মিয়া বলেন, গেল বছর অতিবৃষ্টি ও ছয় ছয় বার বন্যায় অনেকের ফসল ডুবে নষ্ট হয়। বসতভিটা, ফসলি জমি, রাস্তাঘাট ডুবে যায়। কিন্তু এখন সেই নদী এখন শূন্য। চর পড়ে নদী শুকিয়ে গেছে। কৃষক জামান মিয়া জানান, চরে যে জমি জেগে উঠেছে সেখানে বোরো লাগিয়েছি। তবে নদীতে পানি কম থাকায় সেচ ত্রুটি হচ্ছে। ছোটবড় ১৬টি নদনদীর   জেলায় সম্প্রতি দেখা যায়, রাক্ষসী ধরলা নদী শুকিয়ে গেছে।  কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, প্রতি বছর উজান থেকে বন্যার পানির সঙ্গে বালু এসে সব নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যায়। এ অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে জেলার নদ নদী খনন জরুরি হয়ে পড়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর