ব্রিটিশ স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শন হাই ইংলিশ স্কুল নীলফামারী, যা বর্তমানে নীলফামারী সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় নামে পরিচিত। জেলার সবচেয়ে পুরাতন এ স্কুলের লাল ভবনের দিকে তাকালে এখনো চোখে পড়ে ব্রিটিশ স্থাপত্যের নিদর্শন। ১৮৮২ সালে হাই ইংলিশ স্কুল নীলফামারী হিসেবে ব্রিটিশ সরকার এটি লাভ করে। জানা যায়, তৎকালীন জমিদার রেবতী মোহন চৌধুরী ও তমিজ উদ্দিন চৌধুরী নীলফামারীতে শিক্ষার আলো ছড়ানোর জন্য ১৩ দশমিক ২৩ একর জমি দান করেন। যার ওপর বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯১৪ সালে তখনকার স্কুল কমিটি বিদ্যালয়ের পুরাতন লাল ভবনটি নির্মাণ করেন। সেই লাল ভবনেই শুরু হয় শিক্ষা কার্যক্রম। পরে হাই ইংলিশ স্কুলের নাম পরিবর্তনসহ বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি হলেও লাল ভবনটি এখনো অক্ষত রয়েছে। ১৯৫২ সাল থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত তৎকালীন সরকার বিভিন্ন মেয়াদে স্কুলের অবকাঠামোগত উন্নয়নে নানা উদ্যোগ নেন। ১৯৬৮ সালে হাই ইংলিশ স্কুলের পরিবর্তে ‘নীলফামারী সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়’ নামকরণ করে জাতীয়করণ করা হয়। বিদ্যালয়টি জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। এখানে ছাত্রদের খেলাধুলার জন্য রয়েছে দুটি বিশাল মাঠ।
যা হাইস্কুল মাঠ নামে পরিচিত। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ঐতিহাসিক পুরাতন লাল ভবনসহ বিভিন্ন অবকাঠামোর মধ্যে রয়েছে- দুটি নতুন একাডেমিক ভবন, একটি বিজ্ঞান ভবন, প্রধান শিক্ষকের বাসভবন, একটি মসজিদ, একটি তিনতলা বিশিষ্ট ছাত্রাবাস, একটি প্রতিবন্ধী ছাত্রাবাস ও একটি ছোট গার্ডশেড। প্রতি বছর বহু মেধাবী ছাত্র এ প্রতিষ্ঠান থেকে বের হয়ে দেশ-বিদেশে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে চলেছে। শুধু নীলফামারী নয়, তৎকালীন সময় উত্তরাঞ্চলের মানুষের শিক্ষা গ্রহণের জন্য একমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিল এ হাই ইংলিশ স্কুল। এখন বিদ্যালয়ে বিভিন্ন ভবন গড়ে উঠলেও নীলফামারীর ইতিহাসের নিদর্শন স্বরূপ তৎকালীন ব্রিটিশ স্থাপত্য-পুরাতন লাল ভবনটি সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া দরকার বলে জানান স্থানীয়রা।