মঙ্গলবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

সংক্ষিপ্ত

চালককে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাই চক্রের পাঁচ সদস্য গ্রেফতার

নরসিংদীর মাধবদীতে যাত্রীবেশে অটোরিকশাচালক অন্তর মিয়া (১৩)-কে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাই করার ঘটনায় আন্তজেলা অটোরিকশা ছিনতাই চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। রবিবার রাতে জেলার শিবপুর উপজেলা ও নারায়ণগঞ্জ জেলার কাঁচপুরে অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত লোহার রড, গামছা ও ছিনতাইকৃত অটোরিকশাটি উদ্ধার করা হয়। গতকাল দুপুরে নরসিংদী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাহেব আলী পাঠান। তারা হলো, আল আমিন, বকুল মিয়া, অহিদুল ইসলাম মাতব্বর, ছগির ও সাজ্জাদ। নিহত কিশোর অন্তর মিয়া মাধবদীর খিলগাঁও এলাকার মো. কামাল হোসেনের  ছেলে। নিখোঁজ হওয়ার আগে অসুস্থ বাবার ইজিবাইক নিয়ে উপার্জনের জন্য সড়কে নেমেছিল সে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বুধবার দুপুরে অন্তর অটোরিকশা নিয়ে উপার্জনের জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। রাত ৮টা পর্যন্ত তাকে অটোরিকশা চালাতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কিন্তু রাতে সে আর বাড়িতে ফেরেনি।

এরই মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় তাকে খোঁজাখুঁজি করা হয়। পরে না পেয়ে বৃহস্পতিবার সকালে মাধবদী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে তার পরিবার। পরে বিকালে মাধবদী থানার বালাপুরের দরগাকান্দা গ্রামের একটি ডোবায় লাশ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। -নরসিংদী প্রতিনিধিখবর পেয়ে পরিবারের লোকজন গিয়ে অন্তরের লাশ শনাক্ত করেন। মাধবদী থানার পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এরপরই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে তদন্তে নামে জেলা পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ। রবিবার সন্ধ্যায় তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে জেলার শিবপুর উপজেলা থেকে অহিদুল ইসলাম মাতব্বরকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলার কাঁচপুরে অভিযান পরিচালনা করে আল আমিন, বকুল, ছগির ও সাজ্জাদকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত লোহার রড, গামছা ও ছিনতাইকৃত অটোরিকশাটি উদ্ধার করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা অন্তরকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে জেলার বিভিন্ন থানা ও দেশের বিভিন্ন এলাকায় অটোরিকশা ছিনতাই করে আসছে। তারা সবাই অটোরিকশা ছিনতাই চক্রের সদস্য। তারা নিয়মিত দেশের বিভিন্ন স্থানে যাত্রীবেশে অটোরিকশা ছিনতাই করে। তারা কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে ছিনতাই করে থাকে। একটি গ্রুপ টার্গেট ঠিক করে আরেকটি গ্রুপ তা বাস্তবায়ন করে থাকে। বুধবার রাতে তারা অন্তরের অটোরিকশাটি বালাপুরের একটি ওয়াজ মাহফিলে যাওয়ার কথা বলে ৪০০ টাকায় ভাড়া নিয়েছিল। যখন অন্তর তাদের নিয়ে যাওয়ার সময় নির্জন এলাকা দেখে তাকে চেতনানাশক দিয়ে অচেতন করে ফেলে। পরে তাকে রড দিয়ে পিটিয়ে মেরে গামছা দিয়ে হাত-পা বেঁধে ডোবায় ফেলে অটোরিকশা নিয়ে চলে যায়। নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাহেব আলী পাঠান বলেন, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় চুরি, ছিনতাই ও হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের বৃহস্পতিবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। আর আন্তজেলা ছিনতাই চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেফতারে কাজ করছি। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

-নরসিংদী প্রতিনিধি

 

খুনের ঘটনায় স্বামীর বিরুদ্ধে ১২ ঘণ্টার মধ্যে চার্জশিট

গাজীপুরের কাপাসিয়ায় এক কিশোরী বধূকে খুনের ঘটনায় মামলার পর ১২ ঘণ্টার মধ্যে রহস্য উদঘাটন করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী ইমনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মিথ্যা অপবাদে বিতাড়িত হওয়ার পর শ্বশুরবাড়িতে পুনরায় ফিরে যেতে না চাইলে ওই কিশোরী স্ত্রী মারুফা আক্তারকে গলাটিপে হত্যা করে তার স্বামী ইমন। গতকাল গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন। গ্রেফতারকৃত ইমন শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের বরকুল গ্রামের এমদাদুল্লাহর ছেলে। কাপাসিয়া থানার ওসি এ এফ এম নাসিম জানান, কাপাসিয়া উপজেলার সিংহশ্রী ইউনিয়নের মাসুদ মিয়ার মেয়ে মারুফা আক্তার শ্রীপুরের বরমী বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

সে শ্রীপুরের বরকুল গ্রামের নানার বাড়িতে থেকে ওই বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করত। মারুফার সঙ্গে ওই গ্রামের ইমনের পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে তাদের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রায় বছরখানেক আগে তারা বিয়ে করে। ইমন কোনো কাজকর্ম না করায় তাদের মাঝে ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকত। সম্প্রতি ইমন মাওনা এলাকার একটি পোশাক কারখানায় চাকরি নেয়।  অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন জানান, কয়েক দিন আগে শ্বশুরবাড়িতে চুরি করার অপবাদ দিলে মারুফা রাগ করে প্রথমে নানির বাড়ি এবং পরে বাবার বাড়ি চলে আসে। স্ত্রীকে পুনরায় ফিরিয়ে নিতে ইমন শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে তার শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে যায়। এ সময় মারুফাকে শ্বশুরবাড়ি ফিরে যেতে বললে সে অস্বীকার করে। এতে ক্ষুব্ধ হয় ইমন। এ ঘটনার পর রাতে বাড়ির সবাই খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। গভীর রাতে ঘুমন্ত স্ত্রী মারুফাকে গলা টিপে হত্যা করে জানালা দিয়ে পালিয়ে যায় ইমন। পরদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠে মারুফার লাশ খাটের ওপর পড়ে থাকতে দেখেন বাড়ির লোকজন। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। নিহতের পরিবার জানায়, মারুফাকে গলা টিপে হত্যার কথা পরদিন শনিবার বেলা ১১টায় ঘাতক ইমন নিহতের বাবাকে মোবাইল ফোনে জানায়। এ সময় সে জানায় স্ত্রী মারুফাকে হত্যার পর সে নিজেও ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে পালিয়ে যায়। পুলিশের ওই কর্মকর্তা আরও জানান, এ ঘটনায় নিহতের পিতা বাদী হয়ে জামাতা ইমনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। পুলিশ আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় নিহতের স্বামী ইমনকে শ্রীপুরের সাতখামাইর রেলস্টেশন এলাকা হতে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত ইমন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।

-গাজীপুর প্রতিনিধি

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর