সোমবার, ২১ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই গ্রুপে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই গ্রুপে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

লালমনিরহাটে শ্রমিকদের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মাইক্রোবাস, বাস ও মিনিবাস শ্রমিকদের দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ভাগবাটোয়ারাকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন থেকে উভয় গ্রুপের মধ্যে চাপা ক্ষোভ লক্ষ্য করা যায়। এরই জের ধরে দুই গ্রুপের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে ৫ শ্রমিক আহত হয়। গতকাল দুপুরে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের পাশে এ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। জানা যায়, দীর্ঘদিন থেকে লালমনিরহাটে বাস মিনিবাস শ্রমিকদের কোনো কমিটি না থাকায় বর্তমান সভাপতি আমিনুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক বুলবুল আহমেদ একক প্রাধান্য বিস্তার করে আসছে। এরই মধ্য ওই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক শ্রমিকদের নিজস্ব অফিস বানানোর জন্য ক্রয়কৃত ৮শতাংশ জমি বিক্রয় করে সমুদয় টাকা আত্মসাৎ করে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনাটি জানাজানি হলে শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ ও বিভেদ সৃষ্টি হয় এবং শ্রমিকরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। শুরু হয় শ্রমিকদের আন্দোলন। সাধারণ শ্রমিকরা বর্তমান এই সভাপতি আমিনুল ও সম্পাদক বুলবুলকে সরিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য কমিটির দাবি জানান।

 সাধারণ শ্রমিকদের আন্দোলনের তোপের মুখে পড়ে বাধ্য হয়ে সভাপতি আমিনুল ও সম্পাদক বুলবুল আগামী ২১ মার্চ লোক দেখানো বাস মিনিবাস ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের একটি সাধারণ সভা ডাক দেয়। এরই প্রেক্ষিতে তারা বহিরাগত ক্যাডার ভাড়া করে ঢাকা বাসস্ট্যান্ড ও কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে মহড়া প্রদর্শন করতে থাকে।  গতকাল দুপুরে সভাপতি আমিনুল ও সম্পাদক বুলবুলের ক্যাডার বাহিনী কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে অপর গ্রুপের  শ্রমিক নেতা লাবু ও দুলুকে বেদম মারপিট করে। পরে সাধারণ শ্রমিকরা সংঘবদ্ধ হয়ে তাদের ধাওয়া করলে উভয় গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়।  ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার এক পর্যায়ে শ্রমিক নেতা মুন্নাসহ উভয় গ্রুপের ৫ জন আহত হয়। এ সময় রংপুর-লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কের দুই পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। দীর্ঘক্ষণ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহত শ্রমিকরা বর্তমানে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। শ্রমিক নেতা মুন্না জানান, আমরা সাধারণ শ্রমিকদের ন্যায় আদায়ের জন্য আন্দোলন করছি। কিন্তু বর্তমান সভাপতি ও সম্পাদক জোর করে ক্ষমতায় থেকে শ্রমিকদের রক্ত চুষে খাচ্ছে।  তারা সাধারণ শ্রমিকদের রক্ত ঝরানো অর্থে ক্রয়কৃত জমি অবৈধভাবে বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এর প্রতিবাদ করার জন্যই তারা সন্ত্রাসী ভাড়া করে এ হামলা চালায়। আমরা এর ন্যায্য বিচার দাবি করছি। সাধারণ সম্পাদক বুলবুল আহমেদ ক্যাডার বাহিনী নিয়ে মহড়া ও হামলার কথা অস্বীকার করে বলেন, আমরা সব সময় সাধারণ শ্রমিকদের কথা চিন্তা করে কাজ করছি। এ জন্য সোমবার আমরা সাধারণ সভার আয়োজন করার ঘোষণা দিয়েছি। খুব শিগগিরই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় সভাপতি আমিনুল ইসলাম আহত হয়েছেন বলেও জানান তিনি।

সর্বশেষ খবর