ঝুঁকিতে মৌলভীবাজারের মনু নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ। এই নদীর ভাঙন রোধ এবং বন্যার স্থায়ী সমাধানে ‘মনু নদের ভাঙন থেকে কুলাউড়া, রাজনগর ও মৌলভীবাজার সদর রক্ষা’ প্রকল্পে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নদের কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের বেলেরতল সাইট থেকে ভরাট করা জিও ব্যাগ খালি করে গতকাল অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়রা জিও ব্যাগভর্তি একটি ট্রাক আটক করেন এলাকাবাসী। এ ছাড়া গত ২০ জুন রাজনগর উপজেলার আদনাবাদ এলাকায় নদে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙনকবলিত ও ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে জিও ব্যাগ না ফেলে রাতের আঁধারে এক হাজারের বেশি ব্যাগ স্রোতে ভাসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ব্লক নির্মাণে নিম্নমানের পাথর ব্যবহারেরও অভিযোগ আছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, মনু নদের ভাঙন থেকে কুলাউড়া, রাজনগর ও মৌলভীবাজার সদর রক্ষা প্রকল্প ২০২০ সালের জুনে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন হয়। প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৯৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা। ২০২৩ সালের জুনে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু দুই বছরে সম্পন্ন হয়েছে মাত্র ২৩ শতাংশ। এর মধ্যে বেশির ভাগ কাজ ভেসে যাচ্ছে নদীর স্রোতে। বেলেরতল গ্রামের কয়েছ ও আবদুস শাহিদসহ অনেকে বলেন, পানি বাড়ার সময় ঠিকাদারের লোকজন জিও ব্যাগ খালি করেন। আমরা ভেবেছিলাম হয়তো এগুলো এখানে রাখবে। কিন্তু ঠিকাদারের লোকজন গোপনে নিয়ে যাওয়ার সময় আমরা গাড়িসহ জিও ব্যাগ আটক করি। সাবেক ইউপি সদস্য আব্বাস আলী বলেন, ঠিকাদারের লোকজন অনিয়ম করছে। সরকারের এই মেগা প্রকল্পের কাজে পাউবো সম্পূর্ণ উদাসীন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজার আবিদ বলেন, স্থানীয়দের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। জনপ্রতিনিধি ও কুলাউড়া উপজেলা প্রশাসনের উপস্থিতিতে বিষয়টি সমাধান হয়েছে। কুলাউড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান বলেন, ৫ হাজার বস্তা জিও ব্যাগ এখানেই থাকবে। বালু কোথা থেকে আসবে পরবর্তীতে আলোচনা করে দেখা যাবে। নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আখতারুজ্জামান বলেন, ঠিকাদার দুটি সাইটে কাজ করছে। ওই সাইটে বালু না পাওয়ায় সেখানে জিও ব্যাগ নিতে চেয়েছিল। এলাকাবাসীর বাধা দেওয়ায় তাকে নিষেধ করা হয়েছে।