নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় রাশেদ নামে এক কাপড় ব্যবসায়ীকে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে বেধড়ক পেটানোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। প্রায় ১ মিনিট সময় পেটানোর ভিডিও থাকলেও ব্যবসায়ীকে পেটানো হয়েছিল প্রায় ১০ মিনিট ধরে। একপর্যায়ে ব্যবসায়ী রাশেদকে কুপিয়ে রাস্তায় ফেলে যায় সন্ত্রাসীরা। থানা এলাকার দেওভোগ শেষমাথা এলাকায় ১১ দিন আগে এ ঘটনায় গত রবিবার রাতে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে নির্যাতিত ব্যবসায়ী রাশেদের বাবা নিজাম উদ্দিন বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেন।
এ মামলায় এখনো কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। গত কয়েক মাসে নারায়ণগঞ্জে কয়েক দফা প্রকাশ্যে কিশোর গ্যাং বাহিনী কর্তৃক সাধারণ মানুষকে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
কিন্তু কোনো কিছুতেই কিশোর গ্যাং বাহিনী দমানো যাচ্ছে না জেলা শহর নারায়ণগঞ্জে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, একজন ব্যক্তিকে কয়েকজন মিলে কাঠের লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটাচ্ছে। লাঠির আঘাতে ওই ব্যক্তি পেটুয়া বাহিনীর কাছ থেকে নিজেকে রক্ষায় চিৎকার করছেন। আশপাশে অনেক লোকজন দাঁড়িয়ে মারধর দেখলেও কাউকে এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি। নির্যাতনের একপর্যায়ে ওই ব্যক্তি নিথর হয়ে মাটিতে পড়ে থাকেন। এ সময় সন্ত্রাসীরা চলে যায়। ভিডিওটি পার্শ্ববর্তী এক বাড়ির জানালা থেকে করা হলেও কে ভিডিওটি করেছে তা জানা যায়নি। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় উল্লেখ করা হয়, ফতুল্লার পশ্চিম দেওভোগ এলাকার নিজাম উদ্দিনের ছেলে রাশেদ (২৬)। ৩ নভেম্বর বিকালে ভোলাইল থেকে মোটরসাইকেলে কাশিপুর যাওয়ার পথে দেওভোগ শেষমাথা এলাকায় পূর্ব বিরোধের জেরে স্থানীয় সন্ত্রাসী কিশোর গ্যাং লিডা রাজু, জুয়েল প্রধান ও তাদের গ্রুপের লোকজন পথরোধ করে রাশেদকে এলোপাতাড়ি পেটায়। এ সময় আশপাশ থেকে অনেকেই পিটুনির ভিডিও রেকর্ড করে রাখেন। ওই ভিডিও ১০ দিন পর ফেসবুকে একাধিক লোকজন তা আপলোড করেন। স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, নারায়ণগঞ্জে প্রায় অর্ধশত কিশোর গ্যাং বাহিনী চাঁদাবাজি ও ছিনতাইসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ে সাধারণ মানুষকে নির্যাতন করছে। কিছুদিন আগে ফতুল্লার মাসদাইর এলাকায় একটি ফ্ল্যাট বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দেখা যায় সেখানে মানুষকে তুলে নিয়ে মুক্তিপণ আদায়ে ভয়াবহ নির্যাতন করা হতো। ওই ঘটনায় আটক একজন কিশোর গ্যাং বাহিনীর মোবাইলে পাওয়া যায় সেই ভয়াবহ নির্যাতনের ভিডিও। এ ছাড়া কয়েক মাসে দফায় দফায় কিশোর গ্যাং বাহিনী শত শত বাড়িঘরে প্রকাশ্যে ধারালো অস্ত্রসহ মহড়া দিয়ে ভাঙচুর করেছে। কিন্তু কিছুতেই নির্মূল করা যাচ্ছে না কিশোর গ্যাং। এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ রিজাউল হক বলেন, আসামিদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতারে পুলিশের একটি টিম কাজ করছে।