চারদিকে পাহাড়। তার ভাঁজে চা বাগান। বাগানে আছে বিভিন্ন প্রজাতির চারাগাছ। গাছে গাছে বানরের ছোটাছুটি। মাঝখানে বিস্তীর্ণ জলরাশি। স্থানীয়দের কাছে এ জলরাশি ভাড়াউড়া লেক নামে পরিচিত। লেকের জলে ভাসছে লাল শাপলা। লেকজুড়ে উড়ে বেরাচ্ছে নানা প্রজাতির পাখি। পড়ন্ত বিকালে লেকের জলে আছড়ে পড়ছে লাল সূর্য। সন্ধ্যা নামতেই পুরো লেকে সৃষ্টি হয় অন্য আবহের। তখন পাখিরা দল বেঁধে নীড়ে ফেরে। এক এক করে সাদা বক এসে বসে গাছের মগ ডালে। লেকের চারপাশ থেকে ভেসে আসে শিয়ালসহ নানা প্রাণীর ডাক। শ্রীমঙ্গল শহর থেকে প্রায় সাত কিলোমিটার দূরে ভাড়াউড়া চা বাগানের লেকে গেলেই চোখে পড়ে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য। সবুজে ঘেরা এ লেকের নিরিবিলি পরিবেশ ও নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে মুন্ধ প্রকৃতিপ্রেমীরা। চা বাগানের নাট মন্দির থেকে একটু সামনে গিয়ে ডান পাশের আঁকাবাকা পথ ধরে ৩০ মিনিট এগোলেই চোখে পড়বে সরু পথ। এ পথের মুখেই রয়েছে হুনুমানের মূর্তি। পথ বেয়ে উঠতে হবে টিলায়। যার নাম শঙ্কর টিলা। শঙ্কর টিলার চূড়ায় আছে মহাদেব মূর্তি। আর বাগানের ৯ নম্বর সেকশনের এ টিলার নিচে লেক। লেকের চারপাশে টিলা। দক্ষিণ-পূর্ব দিকে তাকালে দেখা যায় পাঁচতারকা মানের হোটেল গ্র্যান্ড সুলতান। পশ্চিমে টিলার ভাঁজে ভাঁজে চা গাছ। উত্তরে রেললাইন ও পূর্বে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান। এসব যেন লেকের সৌন্দর্যকে দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। শঙ্কর টিলার ঢালু দিয়ে নামতে হয় লেকে। ৯ নম্বর সেকশনের চৌকিদার বিরবল হাজরা বলেন, দিন দিন লেকটি দেশি-বিদেশি পর্যটকের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে। সাইকেলিস্ট চমক দে বলেন, এ লেক প্রকৃতির অপরূপ সৃষ্টি। একবার এখানে এলে প্রকৃতি বার বার টানে। শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার সহসভাপতি খালেদ হোসেন বলেন, লেকটি খুবই দৃষ্টিনন্দন। পর্যটকরা এখানে এসে মুন্ধ হন। প্রকৃতির এ সৌন্দর্য যাতে নষ্ট না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।