বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

কাপ্তাই হ্রদে পানি সংকট হুমকিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

কাপ্তাই হ্রদে পানি সংকট হুমকিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন

রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের আশঙ্কাজনক হারে কমছে পানির স্তর। এতে মারাত্মক সংকট তৈরি হয়েছে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে। ২৪৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন কেন্দ্রের পাঁচ ইউনিটের মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে চারটি। চালু আছে মাত্র একটি। আর  বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ৩০ মেগাওয়াট। যা স্বাভাবিকের চেয়ে বহুগুণ কম। একই অবস্থা কাপ্তাই হ্রদে নৌপথে চলাচলেও। ভাসমান ডুবোচরের কারণে দেখা দিয়েছে নানা বিরম্বনা। এরই মধ্যে নৌ-যোগাযোগ বিচ্ছিন্নের পথে রাঙামাটির ছয়টি উপজেলা। সেগুলো হচ্ছে- বরকল, জুরাছড়ি, বিলাইছড়ি, হরিনা, লংগদু, নানিয়ারচর ও বাঘাইছড়ি।  অস্বাভাবিকভাবে হ্রদের পানির স্তর নিচে নামাতে তৈরি হয়েছে এ সংকট বলছেন সংশ্লিষ্টরা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কাপ্তাই হ্রদে বোরধানের চাষাবাদের জন্য কমানো হয়েছে রাঙামাটি হ্রদের পানি। তাই কৃষি উৎপাদনের জন্য ডুবোচর ভেসে উঠলেও তৈরি হয়েছে নানামুখি সংকট। নৌ-যোগাযোগ বিচ্ছিন্নের পাশাপাশি ভরা মৌসুমেও মিলছে না কাপ্তাই হ্রদে মাছ। যেমন হুমকিতে পড়েছে মৎস্য উৎপাদন, তেমনি সংকটে বিদ্যুৎ উৎপাদন। এতে রাজস্ব আয়েও তৈরি হয়েছে বিরাট ঘাটতি। অন্যদিকে খাবার ও দৈনন্দিন পানির সংকটে পড়ছে পাহাড়ের বাসিন্দরাও। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে স্থানীয়দের মধ্যেও। রাঙামাটি মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণি কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক কমান্ডার এম তৌহিদুল ইসলাম ট্যাজ জানান, সময়ের আগে কমানো হয়েছে কাপ্তাই হ্রদের পানি। পানি সংকটের কারণে হুমকিতে পড়েছে মৎস্য উৎপাদন। এভাবে পানি কমলে মা মাছ রক্ষাতে বন্ধ করে দিতে হবে হ্রদে মাছ শিকার। এতে বেকার হবে মৎস্যজীবীরা। আর খাদ্য সংকটে পড়বে জেলেরাও। অন্যদিকে শুষ্ক মৌসুমে রাঙামাটিবাসী এমন দুর্ভোগের চিত্র  দেখলেও এবার সময়ের আগে সমস্যার শুরু হয়েছে বলছেন রাঙামাটি লঞ্চ মালিক সমিতির সহসভাপতি মঈনু উদ্দীন সেলিম। তিনি বলেন, কাপ্তাই হ্রদের পানি কমে যাওয়ার কারণে লঞ্চ চলাচলে বাধা তৈরি করেছে ভেসে উঠা অসংখ্য ডুবোচর। খুব দ্রুত বন্ধ হয়ে যেতে পারে উপজেলায় লঞ্চ চলাচল। তবে কাপ্তাই হ্রদে পানি না বাড়লে এমন সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে না বলছেন কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. এটিএম আবদুজ্জ জাহেদ। তিনি বলেন, কাপ্তাই হ্রদে পানি-স্বল্পতার কারণে কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্রে মারাত্মক আকারে উৎপাদন ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ২৪৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন কেন্দ্রের পাঁচ ইউনিটের মধ্যে চালু আছে মাত্র একটি। পিক-আওয়ারে রেশনিং পদ্ধতিতে বর্তমানে দৈনিক সর্বোচ্চ ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে। কারণ রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদে বর্তমানে পানি আছে মাত্র ৭৯.৭০ ফিট এমএসএল। যা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম। এর চেয়ে বেশি কমে গেলে পানি, বন্ধ করে দিতে হবে বিদ্যুৎ উৎপাদন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর