রবিবার, ২ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

পাবিপ্রবি পরিবহন পুলে নষ্ট হচ্ছে গাড়ি

পাবনা প্রতিনিধি

পাবিপ্রবি পরিবহন পুলে নষ্ট হচ্ছে গাড়ি

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) প্রশাসনিক ভবনের পেছনে খোলা আকাশের নিচে দীর্ঘদিন ধরে অরক্ষিত পড়ে আছে পাজেরো, অ্যাভেঞ্জার, বাসসহ বেশ কয়েকটি দামি গাড়ি। বছরের পর বছর পড়ে থেকে চুরি হয়ে গেছে যন্ত্রাংশ। কোটি টাকা মূল্যের এসব গাড়ি নষ্ট না করে ব্যবহার উপযোগী করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে লাগানোর দাবি শিক্ষার্থীদের। দীর্ঘদিন ধরে অব্যবহৃত গাড়িগুলো খোলা আকাশের নিচে রোদে পুড়ে নষ্ট হচ্ছে। গাড়িগুলোকে যথাযথভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না করার কারণে বডি, ইঞ্জিনসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ চুরি ও নষ্ট হচ্ছে। যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও সম্পদের অপচয়ের পাশাপাশি শিক্ষক-কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পুলের প্রশাসক ড. রাহিদুল ইসলাম রাহী জানান, গাড়িগুলো দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার না করার কারণে অনেক যন্ত্রাংশই নষ্ট হয়ে গেছে। এর মধ্যে পাজেরো গাড়িটির ইঞ্জিনে সমস্যা রয়েছে, অ্যাভেঞ্জা গাড়িটির গিয়ার বক্সে সামান্য সমস্যা রয়েছে, শিক্ষার্থীদের বাসটির বডি ফিটনেসে সমস্যা রয়েছে। তবে অর্থের অভাবে গাড়িগুলো মেরামত করা যাচ্ছে না। সরকার একটি গাড়ি মেরামত করার জন্য যে অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়কে দিয়ে থাকে সে অর্থ দিয়ে গাড়িগুলো মেরামত করা সম্ভব নয়। ফলে এ গাড়িগুলোকে এভাবে ফেলে রাখতে হয়েছে। আগের পরিবহন প্রশাসকের কিছুটা অবহেলার কারণে এমনটি হয়েছে। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পরিবহন পুল সংশ্লিষ্টরা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের দাবি, শিক্ষার্থীদের বাসটি (১ নম্বর বাস নামে পরিচিত) মেরামতের জন্য গত বছর সরকার থেকে অর্থ পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু তৎকালীন প্রশাসক নয়ছয় করে সে অর্থ দিয়ে অন্য বাসগুলো মেরামত করার বিল-ভাউচার করা হয়েছে। অন্যদিকে অ্যাভেঞ্জা গাড়িটি একদমই ভালো রয়েছে, গিয়ার বক্সে সামান্য সমস্যা দেখা দেওয়ার পর সেটিও মেরামত করা হয়। কিন্তু মেরামতের কয়েক দিন পরই আবারও গিয়ার বক্স নষ্ট হয়। যার কারণে গাড়িটি বসিয়ে রাখা হয়েছে। এভাবে তিনটি গাড়ি মেরামত না করে ফেলে রাখাকে বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি কোষাগারের অর্থের অপচয় করা হচ্ছে বলে দাবি শিক্ষার্থীদের।

তাদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় নানান সীমাবদ্ধতার মধ্যে চলছে। এ গাড়িগুলো এভাবে ফেলে রেখে সরকারের অর্থ এবং সম্পদ নষ্ট করা হচ্ছে। একই সঙ্গে বাড়ানো হচ্ছে শিক্ষক-কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি। পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হামিদুর রহমান শামীম বলেন, ‘এভাবে তিনটি গাড়ি ফেলে রাখার বিষয়টা দুঃখজনক। এ গাড়িগুলোর অর্থ সরকারি কোষাগার থেকে এসেছে। গাড়িগুলো এভাবে ফেলে রেখে আমরা সরকারি অর্থ নষ্ট করছি। এখানে প্রশাসনের পরিকল্পনার অভাব রয়েছে। সঠিক পরিকল্পনা থাকলে গাড়িগুলো এভাবে নষ্ট হতো না।’ ইতিহাস ও বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী খালেদ আহমেদ রনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে এমনিতেই বাস সংকটে কষ্ট করে শিক্ষার্থীদের যাতায়াত করতে হয়। আর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদাসীনতায় বাস নষ্ট হচ্ছে, বিষয়টা হতাশাজনক। সঠিক পরিকল্পনার অভাবে শিক্ষার্থীরা কষ্ট করছেন।’ বিষয়টি নিয়ে পাবিপ্রবির প্রক্টর ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে পাজেরো ও অ্যাভেঞ্জা গাড়ি দুটি মেরামতের জন্য ইউজিসির কাছে আবেদন জানিয়েছি। ইউজিসির অনুমতি পেলে গাড়ি দুটি ঠিক করব। সে পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।’

সর্বশেষ খবর