সোমবার, ২২ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

ঝুঁকি নিয়েই বাঁশের সাঁকোতে পারাপার, দুই গ্রামের ভোগান্তি

মাঝে মধ্যে ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা

শামীম কাদির, জয়পুরহাট

ঝুঁকি নিয়েই বাঁশের সাঁকোতে পারাপার, দুই গ্রামের ভোগান্তি

জয়পুরহাটে তেঘরবিশার জুংলীপাড়া-আজাদপাড়া খালের (ক্যানেল) ওপর বাঁশের তৈরি সেতু দিয়ে যাতায়াত করছে হাজার হাজার মানুষ। এতে বাঁশ ভেঙে মাঝেমধ্যেই ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা। ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে শিক্ষার্থীসহ দুই পারের কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখানে সেতু নির্মাণে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, জয়পুরহাট সদর উপজেলার মোহাম্মাদাবাদ ইউনিয়নের তেঘরবিশা জুংলীপাড়া-আজাদপাড়া গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ চলাচল করে এই বাঁশের সেতু দিয়ে। যুগের পর যুগ এখানে সেতু না থাকায় গ্রামবাসীরা নিজ উদ্যোগে এই সেতুটি নির্মাণ করলেও বর্তমান বেশ কিছু জায়গায় ভেঙে ঝুঁকিপূর্ণ হয়েছে। এই সেতু দিয়ে কোনো গাড়ি যাতায়াত করতে পারে না, তাই হেঁটে চলাচল করতে হয় সাধারণ মানুষদের। মাঝেমধ্যেই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটার পাশাপাশি বড় দুর্ভোগ পোহাতে হয় কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নেওয়ার সময়। এ ছাড়া ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয় শিক্ষার্থীদের। বর্ষা এলে হয় আরও ঝুঁকিপূর্ণ। অবিলম্বে এখানে সেতু নির্মাণের দাবি গ্রামবাসীদের। জুংলীপাড়ার শারমিন আক্তার বলেন, এই বাঁশের সেতুর কারণে আমাদের অনেক সমস্যা হয়। যাতায়াত করতে গিয়ে পড়ে কারও হাত ভাঙে, কারও পা ভাঙে। সরকার থেকে এখানে একটি সেতু করে দিলে আমাদের অনেক সুবিধা হয়। আজাদপাড়া গ্রামের কামরুজ্জামান নামে একজন বলেন, দুই গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন এই বাঁশের সেতু দিয়ে চলাচল করে। এখানে নতুন করে সেতু হওয়ার কথা আমরা দীর্ঘদিন থেকে শুনে আসছি। চেয়ারম্যান, মেম্বার, ইঞ্জিনিয়ার এসে বারবার মাপ দিয়ে যায়, কিন্তু কাজ হয় না। আমাদের গ্রাম থেকে সরাসরি ভ্যান রিকশাসহ কোনো যানবাহন চলাচল করে না। এতে আমাদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। মোসলেম উদ্দীন বলেন, আমরা গ্রামবাসীদের কাছ থেকে বাঁশ নিয়ে নিজেরাই এ বাঁশের সেতু নির্মাণ করেছি। কিন্তু কয়েক মাস যেতেই বাঁশগুলো ভেঙে যায়। এই বাঁশের সেতু দিয়ে কোনো পরিবহন যাতায়াত করতে পারে না। কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নেওয়ার সময় কাঁধে করে রোগীকে ওইপারে নিয়ে যাওয়ার পর গাড়িতে তুলতে হয়। কোনো মালামাল পরিবহন করা যায় না। এ জন্য আমাদের অনেক দুর্ভোগ। সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, এখানে যেন দ্রুত একটি নতুন সেতু নির্মাণ করা হয়। স্থানীয় মোহাম্মদাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান আতোয়ার রহমান জানান, জনদুর্ভোগের কথা ভেবে এখানে দ্রুত সেতু নির্মাণের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। একই ইউনিয়নের বাসিন্দা চন্দন কুমার শীল বলেন, পাকা সেতু না থাকায় বর্ষা মৌসুমে ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকোতে পারাপার করতে হচ্ছে। অপর বাসিন্দা স্থানীয় মসজিদের ইমাম মাওলানা রফিকুল ইসলাম বলেন, গ্রামের বাসিন্দাদের মৃত্যু হলে ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকোতে দাফনের জন্য নিয়ে যেতে হয়। এ সময় পারাপার করতে গিয়ে সাঁকোর নিচের পানিতে অনেকে পড়ে আহত হয়েছেন। অপর গ্রামের বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, গ্রামের বিয়ে-শাদিতে পারাপার হতে গিয়ে অনেকে পানিতে পড়েছেন। এ বিষয়ে জয়পুরহাট সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, সেতুটি নির্মাণে ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ এলেই কাজ শুরু হবে সেতুটির।

 

সর্বশেষ খবর