শুক্রবার, ২ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

খাদ্য গুদামে অনীহা কৃষকের

ধান-চাল সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহতের আশঙ্কা

সৈয়দ বয়তুল আলী, মৌলভীবাজার

খাদ্য গুদামে অনীহা কৃষকের

সরকার নির্ধারিত মূল্যে খাদ্য গুদামে ধান ও চাল বিক্রি করতে অনীহা মৌলভীবাজারের কৃষকদের। ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় বোরো চাষিরা পাইকার ও মিল মালিকদের কাছে ধান বিক্রি করছেন। ফলে এ মৌসুমেও মৌলভীবাজারে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানের বাস্তবায়ন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এবার প্রতি কেজি ধানের দাম ৩০ টাকা এবং চালের দাম ৪৪ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে ৪ হাজার ৭৪৯ মেট্রিক টন ধান ও ৭ হাজার ৬১২ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলবে। ৩০ মে পর্যন্ত ২ হাজার ৮৩৪ মেট্রিক টন চাল ও ৫০৪ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ হয়েছে। জানা যায়, কৃষকরা সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে খোলাবাজারে ধান বিক্রি করছেন। গুদামের চাহিদা অনুযায়ী ধান প্রস্তুত করতে গেলে প্রতি মণে আরও ৫-৭ কেজি কমে যায় বলে জানান কৃষকরা। এ ছাড়া সরকারি গুদামে ধান বিক্রিতে বাড়তি পরিবহন ও শ্রমিক খরচ রয়েছে। অনলাইনে অ্যাপসের মাধ্যমে আবেদন, বিক্রয়ে অনিশ্চয়তা এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্টসহ নানা প্রক্রিয়াগত জটিলতায় পড়তে হয় বলে জানিয়েছেন তারা। রাজনগর উপজেলার কাউয়াদীঘি হাওর পাড়ের কৃষক আজাদ মিয়া বলেন, ‘সরকারি গুদামে হাইব্রিড ছাড়া অন্য জাতের ধান সাধারণত কৃষকরা দেন না। অন্য জাতগুলো দিলে কৃষকের লোকসান হয়। এ কারণেই মূলত সরকারের ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয় না। এ বছর আমাদের এলাকার হাওরগুলোতে ব্রি-২৮ ও ২৯ জাতের ধান ব্লস্ট রোগে আক্রান্ত হওয়ায় উৎপাদন কমেছে। হাকালুকি হাওর পাড়ের কৃষক ইউপি সদস্য শাহেদ আহমদ বলেন, বিগত বছরের তুলনায় এবার জমিতে বোরো ধান কম হয়েছে। বছরের খোরাকির পর অবশিষ্ট ধান আছে এমন কৃষক সংখ্যা কম। যাদের অবশিষ্ট আছে তাদের ধান ব্যবসায়ী ও মিল মালিকরা সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে কিনে নিচ্ছেন। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা জ্যোতি বিকাশ ত্রিপুরা বলেন, অনেকে আমাদের শর্ত পূরণ করতে না পারায় ধান-চাল দিতে পারেন না। সরকারি গুদামে ধান-চাল বিক্রি করতে আমরা প্রচারণা চালাচ্ছি এবং কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছি। আশা করছি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব হবে।

সর্বশেষ খবর