শনিবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভাঙা টিনের চালা ও মাটির ক্লাস রুমে পাঠদান

মেঝের ধুলাবালি উড়ছে সারা ক্লাসে

সরকার হায়দার, পঞ্চগড়

ভাঙা টিনের চালা ও মাটির ক্লাস রুমে পাঠদান

টিনের বেড়া আর টিনের চাল। মেঝের ধুলাবালি উড়ছে সারা ক্লাস রুমে। যেন ধুলাবালির ঘর। ভাঙা বেড়ার ফাঁক দিয়ে দেখা যায় পুরনো কাঠের বেঞ্চ বইয়ের ব্যাগের সারি। দেখা যায় অমনোযোগী ক্লান্ত শিক্ষার্থীর চোখ। ভাঙা দরজা দিয়ে দেখা যায় বহু পুরনো বাঁশের বেড়ায় ঝুলানো আধময়লা ব্লাকবোর্ডে চক দিয়ে লিখছেন ঋণগ্রস্ত ক্লান্ত শিক্ষক। এমন চিত্রই দেখা যায় পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার কালিয়াগঞ্জ আদর্শ নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। দীর্ঘ ২৫ বছর ভাঙা টিনের ঘর আর কাঁচা মাটির ক্লাস রুমেই পাঠদান চলছে এ বিদ্যালয়ে। নানা দুর্ভোগের মধ্যেই শিক্ষার্থীরা অধ্যায়ন করছে। শিক্ষার নিবিড় পরিবেশ না থাকার কারণে শিক্ষকরাও পাঠদানে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ বিদ্যালয় থেকে দেড় থেকে ২ শতাধিক নারী শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে আসছে। দশজন শিক্ষক ও পাঁচজন কর্মচারী পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। কিন্তু বিদ্যালয়েটিতে এখনো শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ গড়ে ওঠেনি। একটি ভাঙা টিনের ঘরেই চলছে পাঠদান কার্যক্রম। স্কুলে পর্যাপ্ত চেয়ার বেঞ্চ নেই। নেই অবকাঠামো। পর্যাপ্ত ব্লাকবোর্ড নেই। কাঁচা মাটির মেঝেতে ওড়ে ধুলাবালি। অনেক সময় চেয়ার বেঞ্চ ভেঙে পড়ে। শিক্ষার্থীরা জানান, ক্লাস রুমের ধুলাবালি নাকে চোখে প্রবেশ করে। এ পরিবেশে লেখাপড়ায় মন বসে না। পরিবেশ না থাকলেও বিদ্যালয়ের পড়াশোনার মান ভালো বলে জানালেন স্থানীয় অবিভাবকরা। অভিভাবক আবু হানিফ জানান, খেলার মাঠ থাকলেও বাউন্ডারি ওয়াল নেই। নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন শিক্ষার্থী এবং অবিভাবকরা। শিক্ষকরা বলছেন, বিদ্যালয়ে টয়লেট এবং ওয়াশ রুম রয়েছে মাত্র একটি। ওই টয়লটই ব্যবহার করতে হচ্ছে শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ কর্মচারীদের। এ রকম অবস্থায় পাঠ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। প্রধান শিক্ষক আবদুল হালিম জানান, প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিনা বেতনে স্কুল চালিয়ে এসেছি। কোনো দিন বন্ধ হয়নি। ২০২২ সালে এমপিওভুক্ত হওয়ার পর কিছুটা স্বস্তি পেলেও প্রত্যেক শিক্ষকই ঋণগ্রস্ত। অমানবিক জীবনজাপনের মধ্যদিয়েও পাঠদান করাচ্ছি। বিদ্যালয়ে ভবন নেই। প্রয়োজনীয় উপকরণও নেই। নানা সংকটের মধ্যদিয়ে পাঠদান চলছে। ওই বিদ্যালয়ে জরুরি ভবন নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে দাবি করে জেলা শিক্ষা অফিসার শাহীন আকতার বলেন, ভবনের অভাবে আরও বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এসব বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মিত হলে শিক্ষার মান বাড়বে। এছাড়া শিগগিরই স্কুলের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। পরিকল্পনায় থাকছে স্কুল ভবনের সংস্কার, শিক্ষকদের মানোন্নয়ন, ছাত্রদের অসুবিধা চিহ্নিত করে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ।

সর্বশেষ খবর