শিরোনাম
শনিবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

আগুনঝুঁকিতে কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টপল্লী

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি

আগুনঝুঁকিতে কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টপল্লী

কেরানীগঞ্জের গার্মেন্টপল্লীতে নেই কোনো অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। পোশাকপল্লীর প্রতিটি ভবন একটি আরেকটির সঙ্গে ঘেঁষে নির্মাণ করা হয়েছে। বিভিন্ন মার্কেটের বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায়। এখানে ১০ হাজার শো-রুম ও ৫ হাজার কারখানায় ৫ লক্ষাধিক মালিক-শ্রমিক আগুনঝুঁকি নিয়েই কাজ করছেন।

সরেজমিন দেখা যায়, বিশাল এলাকা নিয়ে গড়ে ওঠা কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টপল্লীর সড়কগুলো খুবই সরু। কখনো অগ্নিকাণ্ড ঘটলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রবেশের সুযোগ নেই। পল্লীর ভবনগুলোতে বিদ্যুৎ সংযোগের ক্ষেত্রে মানা হয়নি যথাযথ প্রক্রিয়া। দুই ভবনের মাঝে অনিরাপদ স্থানে ট্রান্সফরমার ও তারের জটলা রেখে সংযোগ দেওয়া হয়েছে। যে কোনো সময় শর্টসার্কিট থেকে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। স্থানীয়রা জানান, গার্মেন্ট ও দোকানমালিক সমিতি আগুনের ঝুঁকি এড়াতে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। কেরানীগঞ্জ দোকানমালিক ও গার্মেন্ট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুসলিম ঢালী বলেন, এখানে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের ব্যবস্থা নেই। নেই ফায়ার সেফটি ট্রেনিং। আমরা মাঝে মাঝে শ্রমিকদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে লিফলেট বিতরণ করি। কেরানীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. কাজল জানান, আমরা উপজেলা প্রশাসনের লোক নিয়ে গার্মেন্টপল্লী পরিদর্শন করেছি। বারবারই মালিক সমিতিকে এ ব্যাপারে  তাগাদা দিচ্ছি। দুঃখের বিষয় হচ্ছে গার্মেন্টপল্লীতে বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ড ঘটলে ফায়ার সার্ভিস কিংবা উদ্ধারকর্মীদের গাড়ি প্রবেশের মতো রাস্তা নেই। এ ছাড়া দেখা যাচ্ছে নিচতলায় দোকান রয়েছে এবং ওপর তলায় গুদাম। এ গুদামে শ্রমিকরা কাজ শেষে রাত্রিযাপন করছেন। এখানেই চলছে রান্না-খাওয়া। এ রান্নাবান্না থেকেও বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ড ঘটতে পারে। কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল বিন করিম বলেন, আমি ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তাদের নিয়ে গার্মেন্টপল্লী পরিদর্শন করেছি। এটি খুবই ঘনবসতি এবং ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা। আগুন লাগলে লোকজন কীভাবে বের হবে কারখানাগুলোতে সেই ব্যবস্থাও নেই। ফায়ার সার্ভিস, মালিকসমিতিসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সময়ের মধ্যে কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টপল্লীতে অগ্নি প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে ১১ ডিসেম্বর কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া এলাকায় একটি প্লাস্টিক কারখানায় আগুন লেগে ৩৩ জনের মৃত্যু হয়। এরপর ২০২০ সালের জানুয়ারিতে কদমতলী এলাকায় কেমিক্যাল গুদামে বিস্ফোরণ ঘটে। ২০২১ সালের ৫ সেপ্টম্বর নুরুমিয়া সুপার মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ছাই হয়ে যায় ৩০০টি দোকান।

সর্বশেষ খবর