শিরোনাম
সোমবার, ২১ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

আখচাষে বাম্পার ফলন

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

আখচাষে বাম্পার ফলন

অনুকূল আবহাওয়া, রোগবালাই কম ও সঠিক পরিচর্যার কারণে আশানুরূপ আখ উৎপাদন হওয়ায় খুশি দিনাজপুরের চিরিরবন্দরের কৃষকরা। এখানকার উৎপাদিত আখ খেতে সুস্বাদু ও মিষ্টি। উঁচু জমি, পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকায় আখের বাম্পার ফলন হয়েছে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চিরিরবন্দর উপজেলায় ঈশ্বরদী গেন্ডারি জাতের আখের ফলনও ভালো হয়েছে। স্বল্প খরচ, অধিক লাভজনক ও নগদ অর্থে বিক্রি হওয়ায় উপজেলায় আখচাষের প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যান্য ফসলের তুলনায় এবার বেশি লাভজনক হওয়ায় আখচাষে আগ্রহী হচ্ছেন কৃষকরা। বাজারে চাহিদা থাকায় এবং ভালো মূল্য পাওয়ায় আখচাষিরাও সন্তুষ্ট। কৃষকরা জানান, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া গেলে আরও অধিক হারে পতিত জমিতে আখচাষ সম্প্রসারণ করা সম্ভব হবে। কৃষি বিভাগ জানায়, আবহাওয়া ও মাটির গুণাগুণের ওপর এবং আখের আশানুরূপ ফলন এবং বাজারে চাহিদা থাকায় কৃষকদের মধ্যে আখচাষে আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিভিন্ন হাট-বাজারগুলোতে আখের চাহিদা রয়েছে। চাহিদা থাকায় কৃষকরা খেতেই ভালো দাম পাচ্ছেন। বছরের তিন মাস বাজারে এসব আখ বেচাকেনা করে লাভবান হয় কৃষকসহ খুচরা-পাইকারি বিক্রেতারা। খুচরা বাজারে আকার ও সাইজভেদে প্রতিটি আখ ২০-৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি বিঘা জমিতে আখ উৎপাদনে ৪০-৫০ হাজার টাকা ব্যয় হচ্ছে। উৎপাদিত আখ বিক্রি হচ্ছে দেড় থেকে ২ লাখ টাকায়। চিরিরবন্দর উপজেলার নশরতপুর ইউপির দক্ষিণ নশরতপুর গ্রামের জগদিশ মেম্বারপাড়ার আখচাষি হিরেন্দ্র নাথ রায় (৫৫) জানান, আখ একটি লাভজনক ফসল। এবার রোগবালাই কম, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আখের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে আখের প্রচুর চাহিদাও রয়েছে। এ বছর ২১ শতক জমিতে আখচাষ করেছি। এতে খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা। প্রতিটি আখ ১২-১৫ টাকা দরে পাইকারি বিক্রি করেছি। এ পর্যন্ত ২০ হাজার টাকার আখ বিক্রি করেছি। আমার এ জমি থেকে আরও কমপক্ষে ৩০-৩৫ হাজার টাকার আখ বিক্রি করতে পারব।

 একই এলাকার আখচাষি বাদল চন্দ্র রায় জানান, আখচাষে প্রথমে ৩-৪ বার চাষ ও মই দিয়ে জমি প্রস্তুত করতে হয়। কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাস থেকে শুরু করে ফাল্গুন-চৈত্র মাস পর্যন্ত আখের চারা রোপণ করতে হয়। আখচাষে তেমন একটা সার ও কীটনাশকের প্রয়োজন হয় না। তবে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি সেচের প্রয়োজন হয়। আমি এ বছর দেড় বিঘা জমিতে আখচাষ করেছি। এক বিঘা জমিতে উৎপাদিত আখ প্রায় ২ লাখ টাকায় বিক্রি করেছি। আরও ২৫ শতক জমিতে আখ রয়েছে। তাদের মতো কেশব চন্দ্র রায় ৩৩ শতক, নিমাই চন্দ্র রায় ৪০, কার্তিক সাধু ১০, মনোরঞ্জন চন্দ্র রায় ১২ শতক জমিতে আখচাষ করেছেন। তারা জানান, মৌসুমি ব্যবসায়ীরা জমি থেকেই তা ক্রয় করে নিয়ে যান। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. খাদেমুল ইসলাম বলেন, আখ একটি অর্থকরী ফসল। যা শর্করা উৎপাদনের ৭৫ শতাংশ জোগান দেয়। পাশাপাশি এটি গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জোহরা সুলতানা জানান, অনেক কৃষক বেশি লাভের আশায় গেন্ডারি জাতের আখচাষ করেছেন। আখচাষে তেমন একটা সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয় না। অল্প পরিশ্রম ও খরচে আখচাষে লাভবান হওয়া যায়। এ ছাড়াও আখের সঙ্গে সাথী ফসল হিসেবে অন্যান্য ফসলও চাষ করা যায়।

সর্বশেষ খবর