সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

খেলার মাঠে গাড়িস্ট্যান্ড

খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত শিশু-কিশোর

দীপংকর ভট্টাচার্য লিটন, শ্রীমঙ্গল

খেলার মাঠে গাড়িস্ট্যান্ড

মাঠ দখল করে রাখা বিভিন্ন যানবাহন -বাংলাদেশ প্রতিদিন

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশনের পাশের খেলার মাঠটি দখল করে গড়ে উঠেছে গাড়িস্ট্যান্ড। মাঠের ভিতর প্রতিদিন রাখা হয় প্রায় ৫ শতাধিক যানবাহন। ফলে খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এলাকার শিশু-কিশোর ও যুবকরা। এক সময় শিশু-কিশোরদের দৌড়ঝাঁপ আর হৈ- হৈল্লুরে দিনভর মুখর থাকতো এই মাঠ। হতো ফুটবল, ক্রিকেট খেলা। বিভিন্ন সময়ে টুনার্মেন্টও আয়োজন করা হতো এখানে। খেলা দেখতে কানায় কানায় পূর্ণ হতো মাঠের চারপাশ। বর্তমানে মাঠজুড়ে দেখা যায় কার, লাইটেস, বাস, পিকআপ, আটোরিকশা ও ট্রাক। স্থানীয় বিভিন্ন ক্রিড়া সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে মাঠটি দখলমুক্ত করার দাবি জানাচ্ছে। শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষও মাঠ দখলমুক্ত করতে ওপর মহলে চিঠি দিয়েছে। ২০১৯ সালের ২৯ ডিসেম্বর ঢাকায় রেলওয়ে ভবনে মাসিক সভায় শ্রীমঙ্গল রেলের মাঠের চারদিকে দেয়াল করার সিদ্ধান্ত হয়- আজও কোনো কাজ হয়নি। জানা যায়, স্বাধীনতা উত্তর ও পরবর্তী সময়ে স্থানীয়সহ বিভিন্ন আঞ্চলিক টুর্নামেন্ট হতো এই মাঠে। এখানে খেলে গেছেন সাহেব আলী, নবী হোসেন, মুক্তার হোসেন, ভানু দাশ, দীলিপ সমদ্দারের মতো ফুটবলাররা। রেলওয়ের এ মাঠে খেলা শিখে ঢাকার মাঠ মাতিয়েছেন পিনাকী সেন চৌধুরী, মিলন দাশ গুপ্ত, পীযুষ দত্ত, চন্দন দত্ত, আলী আক্তার, হায়দার জামান নিফুল। ২০১২ সালে এশিয়া প্যাসিফিক রিজিওনালের এপিআর স্কাউটস কনফারেনস স্টাডি ট্যুর উপলক্ষে শহরে সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও যানজট নিরসনে শহর থেকে সরিয়ে তিন দিনের জন্য সব গাড়ি রেলওয়ে মাঠে রাখা হয়েছিল। এরপর থেকে আর মাঠ থেকে গাড়ি সরানো হয়নি। সরেজমিন দেখা যায়, মাঠের এক পাশে কার, লাইটেস অন্য পাশে পিকআপ, ট্রাক রাখা। মাঝখানে রয়েছে বাস এবং সামনের দিকে সিএনজিচালিত আটোরিকশা। স্ট্যান্ডের জন্য মাঠে করা হয়েছে আলাদা আলাদা অফিস। শ্রীমঙ্গল উপজেলা কার-মাইক্রোবাস-বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি ময়না মিয়া বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব ট্রর্মিনাল না থাকায় নিরুপায় হয়ে এই মাঠে গাড়ি রাখছি।’ শ্রীমঙ্গল ফুটবল উন্নয়ন সমিতির সাধারণ সম্পাদক আকবর হোসেন শাহিন বলেন, ‘মাঠের অভাবে খেলাধুলা কমে গেছে। রেলওয়ের মাঠ উন্মুক্ত করে দিলে আবার খেলাধুলার পরিবেশ ফিরবে।’ উপজেলা ক্রিড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মিলন দাশ গুপ্ত বলেন, ‘আগে কৈশোর শুরু হতো খেলাধুলা আর হৈ-হৈলুøর করে। এখন খেলার মাঠ কমে যাওয়ায় শিশুরা সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যুব সমাজ জড়িয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন অপরাধ-অপকর্মে। রেলওয়ে মাঠটি দখলমুক্ত করে খেলাধুলার জন্য উন্মুক্ত করা জরুরি।’ শ্রীমঙ্গল ক্রিড়া সংস্থার সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন বলেন, ‘রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা পেলে মাঠটি দখলমুক্ত করে দেব।’

সর্বশেষ খবর