শনিবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

তিতাসে দেদার বালু লুট

তিন মাস ধরে তোলা হচ্ছে বালু, নদী ভাঙনের শঙ্কা

মোশাররফ হোসেন বেলাল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

তিতাসে দেদার বালু লুট

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে তোলা হচ্ছে বালু -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস নদীর প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে দেদার তোলা হচ্ছে বালু। প্রায় তিন মাস ধরে পাঁচটি ড্রেজারের মাধ্যমে বালু তুলতে দেখা গেছে। এ সময় নদী থেকে কমপক্ষে ১০-১২ কোটি টাকার বালু উঠেছে এমন ধারণা স্থানীয়দের। তিতাসের ওই স্থানটিতে কোনো বালুমহাল নেই কিংবা কাউকে বালু তোলার জন্য ইজারা দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার কাউতলী নৌকাঘাট থেকে বালু তোলার জায়গায় যেতে নৌকায় ৪০ মিনিট সময় লাগে। স্থানীয়রা জানান, জায়গাটি পড়েছে বিজয়নগর উপজেলার মাশাউড়া। পাশেই জেলা সদর ও আখাউড়া উপজেলা। সরেজমিনে দেখা যায়, পাঁচটি ড্রেজার দিয়ে বালু তুলে নৌকায় ভরা হচ্ছে। অপেক্ষায় আছে একাধিক নৌকা। ওই স্থানে যাওয়ার পথে চোখে পড়েছে একাধিক নৌকা বালু নিয়ে যাচ্ছে। ড্রেজারে থাকা লোকজন জানান, তিন মাস ধরে পাঁচ থেকে ১০টি ড্রেজারে করে এখানে বালু তোলা হচ্ছে। প্রতি দুই থেকে আড়াই ঘণ্টায় একেকটি নৌকা বালুভর্তি হয়ে যায়। একেক নৌকায় ৫-৭ হাজার ঘনফুট বালু নেওয়া হয়। প্রতিদিন বালু যায় ৩০ থেকে ৫০টি নৌকা। প্রতিফুট বালু বিক্রি হয় ৫-৯ টাকা। একাধিক সূত্র জানায়, স্থানীয় কয়েকজন বালু তোলার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। তারা একজন জনপ্রতিনিধির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জায়গা ভরাটের নাম করে তিন মাস আগে বালু তোলা শুরু করেছেন। ওই জায়গাটি ইতোমধ্যে ভরাট হয়েছে। মোট বালুর ৪০ শতাংশ ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জায়গার জন্য দেওয়ার শর্তে তারা বালু ওঠান। বাকি বালু বিক্রি করেন। ভাদুঘর ও কাছাইট এলাকার একাধিক ব্যক্তি বলেন, যারা বালু উঠায় তারা প্রভাবশালী। যে কারণে কেউ কিছু বলছেন না। এভাবে চলতে থাকলে কিছু দিনের মধ্যে নদীর ওই এলাকায় ভাঙন শুরু হবে। বালু তোলার সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ উঠা নান্টু মিয়া বলেন, আমি এটার সঙ্গে সরাসরি জড়িত না। আমি শুধু ড্রেজার ভাড়া দিয়েছি। যতটুকু শুনেছি নদী খননের বালু জায়গা না থাকায় এক জায়গায় রাখা হচ্ছে। এর বেশি আমি জানি না। বালু তোলার তদারকিতে থাকা সোহেল মিয়া বলেন, এ জায়গা থেকে বালু উঠানোর জন্য সরকারের কাছে আবেদন করে রাখা হয়েছে। আমরা ইজারা পাব আশা করছি। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সেলিম শেখ বলেন, ওই জায়গায় বালু তোলার অনুমতি নেই। সেখানে একাধিকবার অভিযান চালিয়ে ২ লাখ টাকা জরিমানা এবং ড্রেজার ও নৌকা নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর