রবিবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

আগাম আলু আবাদে চাষিরা

ভালো ফলন ও দাম পাওয়ার আশা

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

আগাম আলু আবাদে চাষিরা

বেশি লাভের আশা নিয়ে বগুড়ার চাষিরা আগাম আলু চাষে মাঠে নেমেছেন। বাজারে আলুর দাম বেশি থাকায় আগ্রহী চাষি জমি তৈরি করে আলু বীজ বপন করেছেন। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, জেলায় ২ শতাধিক হেক্টর জমিতে আগাম জাতের আলু চাষ হয়েছে। জানা যায়, বগুড়ার মাঠে মাঠে ধান কাটার প্রস্তুতি চলছে। কোথাও আবার ধান কাটা শুরু হয়েছে। আগাম জাতের আমন ধান কেটে সেই জমি আলু চাষের জন্য তৈরির কাজে লেগেছেন চাষি। অনেক আলুচাষি বীজ রোপণও শুরু করেছেন। কৃষি অফিস বলছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে দ্বিগুণ ফলন পাবেন চাষিরা। আলু উৎপাদনে সারা দেশের মধ্যে শীর্ষ জেলা বগুড়া। গত মৌসুমে এ জেলায় ৫৩ হাজার ২১৫ হেক্টর জমি থেকে ১২ লাখ ২৪ হাজার টন আলু উৎপাদন হয়। পাকড়ি, এস্টারিক্স, কারেজ, কার্ডিনাল, ডায়মন্ড, গ্র্যানোলাসহ ৩০ জাতের আলু চাষ হয় বগুড়ায়। প্রতি বিঘায় প্রকারভেদে সর্বোচ্চ ১২০ মণ পর্যন্ত আলু পাওয়া যায়। জেলার চাহিদা ২ লাখ টন। এ চাহিদা মিটিয়ে বাকি ১০-১১ লাখ টন আলু যায় রাজধানীসহ সারা দেশে। আলু উৎপাদনের ক্ষেত্রে উদ্বৃত্ত জেলা ধরা হয় বগুড়াকে। আলু সারা বছর পর্যায়ক্রমে বিক্রির জন্য ৩৭টি হিমাগার গড়ে উঠেছে। চলতি বছরের অক্টোবরে আলু চাষের মৌসুমের শুরুতে দাম বেড়েছে। এ কারণে অনেক কৃষকই বেশি দাম পাওয়ার আশায় আগাম জাতের আলু চাষ শুরু করেছেন। নতুন এ আলু বাজারে আসতে শুরু করলে দাম কমে যেতে পারে, ধারণা করছেন কৃষি কর্মকর্তারা। নতুন আলু বাজারে উঠলে হিমাগারের পুরাতন আলুর কদর থাকে না। তাই অধিক লোকসান ঠেকাতে হিমাগারের আলু তাড়াতাড়ি বিক্রি করেন। বগুড়া সদর উপজেলার শাখারিয়া ইউনিয়নে আগামজাতের আলুচাষিরা জমি তৈরি করে বীজ রোপণ করছেন। মাঠে আলুচাষিরা জমি তৈরি করার পর বেড বেঁধে নিচ্ছেন। কোথাও কোথাও চাষি বীজ রোপণ করে বেড তৈরি করে দিচ্ছেন। চাষিরা বলছেন, আবহাওয়া এখন পর্যন্ত ভালো আছে। আমন ধান কাটার পর পুরোপুরি আলু চাষ শুরু হবে। বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফরিদ হোসেন জানান, রবি মৌসুম শুরু না হলেও আলু চাষ শুরু হয়েছে। ১৬ অক্টোবর থেকে বগুড়ায় আগাম জাতের আলু চাষ শুরু করেছেন চাষিরা। জেলার শিবগঞ্জ, বগুড়া সদর, দুপচাঁচিয়া উপজেলায় এখন পর্যন্ত ২ শতাধিক হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। আরও কিছু জমিতে আলু চাষ হবে। মোট ১ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ হবে। ১৬ নভেম্বর থেকে বগুড়ায় রবি মৌসুম শুরু হবে। এ মৌসুমে আলু চাষ হবে ৫৫ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে। আর আলু উৎপাদন হবে প্রায় ১৩ লাখ ২০ হাজার ৪৭৫ টন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ফলন বেড়ে যেতে পারে। গত বছর প্রায় ১২ লাখ টন ধরা হলেও সেখানে শেষ পর্যন্ত আলু উৎপাদন হয় ১৩ লাখ টন। আশা করা হচ্ছে- চলতি বছরও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। এখন পর্যন্ত চাষি পর্যায়ে যে উৎসাহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা শতভাগ অর্জন হবে। বগুড়ার শিকগঞ্জ উপজেলার আলু চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাজারে সার ও কীটনাশকের দাম বেড়েছে। বিঘাপ্রতি উৎপাদন খরচ বেড়ে গড়ে তা ১০ থেকে ১৩ হাজারে দাঁড়াবে। আগাম বাদ দিয়ে পূর্ণ মেয়াদে ৬০-৭০ দিনে এ আলু তুললে বিঘাপ্রতি সর্বোচ্চ ৮০-৯০ মণ আলু পাওয়া যাবে। আর ফলন ভালো হলে শত মণ পাওয়া যেতে পারে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর