মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

হাসপাতালে রোগীর ভিড়

শীতে বেড়েছে ডায়রিয়া জ্বর সর্দি কাশি

সাইফুল মিলন, গাইবান্ধা

হাসপাতালে রোগীর ভিড়

গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে প্রায় এক মাস ধরে জ্বর, সর্দি, ডায়রিয়া, কাশিসহ বিভিন্ন ফ্লুজনিত রোগীর অস্বাভাবিক চাপ দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় বহির্বিভাগ ও শয্যায় রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতাল সূত্র জানায়, হাসপাতালটি সম্প্রতি ২৫০ শয্যার হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু এখানে ১০০ শয্যার চিকিৎসকই নেই। ১০০ শয্যা হিসেবে ৪২ চিকিৎসক দরকার। বর্তমানে আছেন ২২ জন। দীর্ঘদিন ধরে এসব চিকিৎসকের পদ শূন্য। বিশেষত শিশু, চক্ষু, কার্ডিওলজিস্ট, নাক-কান, ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার, চর্ম-যৌনরোগ বিশেষজ্ঞ ও সার্জারি বিভাগে চিকিৎসক নেই। সূত্রটি জানায়, হাসপাতালে প্রতিদিন বহির্বিভাগে গড়ে ১ হাজার ২০০ রোগীকে সেবা দিতে হয়। প্রতিদিন ২৫০ থেকে ৩০০ রোগী ভর্তি থাকে। সরেজমিন দেখা গেছে, টিকিট কাউন্টার ও চিকিৎসকের চেম্বারের সামনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে রোগী ও স্বজনরা। হাসপাতালের ভিতরটা অপরিষ্কার। শিশু ওয়ার্ডের বিছানায় মলমূত্র ছড়িয়ে আছে। মেঝেতে যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা। শৌচাগারগুলো অপরিচ্ছন্ন। সেখানে পানি উপচে মলমূত্র ভেসে বেড়াচ্ছে, দুর্গন্ধে টেকা দায়।  হাসপাতালে ভর্তি সদর উপজেলার ঘাগো ইউনিয়নের কাটিহারা গ্রামের ময়না বেগম (৫৫)। তিনি বলেন, ‘দিনে একবার ডাক্তার দেকি যায়, আর নাই। বাইর থাকি ওষুধ, স্যালাইন কেনা নাগে। নার্চেরা খালি কোন ওষুধ কখোন খামো, তাক দ্যাকে দ্যায়। সরকারি হাসপাতালোত আসিয়া কী নাভ হয়?’ পলাশবাড়ী উপজেলার বেঙ্গুলার গ্রামের আফসার ম লের স্ত্রী প্রসাগী বেগম তিন দিন ধরে হাসপাতালের বারান্দায় চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘হাসপাতালের ওয়ার্ডে বেড ফাঁকা নাই। তাই দুই দিন থাকি বারান্দাত বিছনা পাতি আচি। কী করমো স্বামী হামার দিনমজুর, বাধ্য হয়য়্যা থাকায় নাগে।’ পৌর শহরের শাপলাপাড়া এলাকার মোজাম্মেল হক ম ল (৫৫) বলেন, তিনি দুই বছরের বাচ্চাকে এক সপ্তাহ হলো ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি করেছেন। পরে তার, স্ত্রী ও ৫ বছর বয়সের শিশু কন্যারও ডায়রিয়া হয়েছে। এজন্য পরিবারের সবাইকে হাসপাতালে থাকতে হচ্ছে। শৌচাগার ব্যবহার দূরের কথা, যাওয়াই দুষ্কর। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. এ এইচ এম রাজিউল মজিদ লেলিন বলেন, শীতে সাধারণত সর্দি, কাশি, ডায়রিয়া, শিশু ডায়রিয়া বেশি হয়। তিনি গরম কাপড় পরিধান, গরম পানি পান ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন। ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. তাহেরা আক্তার মনি বলেন, আমি সাময়িক হাসপাতালের দায়িত্ব পালন করছি। এ ব্যাপারে কিছুই বলতে পারব না।

সর্বশেষ খবর