বৃহস্পতিবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

বীজতলায় কোল্ড ইনজুরি, বিপাকে বরেন্দ্রর কৃষক

বীজতলায় কোথাও হলুদ, কোথাও লালচে বর্ণ ধারণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

বীজতলায় কোল্ড ইনজুরি, বিপাকে বরেন্দ্রর কৃষক

বোরো বীজতলা পরিচর্যায় কৃষক -বাংলাদেশ প্রতিদিন

শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশায় বোরো ধানের বীজতলায় কোল্ড ইনজুরিসহ বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। বীজতলার চারা লালচে, হলুদ বর্ণ ধারণ করছে। এ নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকরা। এমন অবস্থায় চাষিরা ক্ষতির শঙ্কার কথা জানালেও কৃষি অফিস বলছে, ধানের বীজ জমিতে বপনের উপযোগী হয়ে গেছে। তাই চিন্তার কোনো কারণ নেই। তবে কুয়াশা থেকে রক্ষায় পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখতে হবে। বর্তমানে যে আবহাওয়া বিরাজ করছে তাতে এটুকু হওয়া স্বাভাবিক। এতে শঙ্কিত হওয়ার কিছুই নেই। কিছু বীজতলা কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়েছে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, বোরো মৌসুম শুরু হয়েছে। রাজশাহী জেলায় বিগত বছরগুলোর চেয়ে এ বছর বেড়েছে বোরো ধানের চাষ। এ বছর রাজশাহী জেলায় বোরো ধানের চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭০ হাজার ১৬৫ হেক্টর। গত বছরের চেয়ে প্রায় ১০০ হেক্টর বেশি জমিতে বোরো ধানের চাষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তারা। রাজশাহী জেলায় এখন পর্যন্ত বোরো ধানের চাষ হয়েছে ১ হাজার হেক্টর।

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের লতিফা হেলেন বলেন, রাজশাহীতে গতকাল দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত কয়েকদিন ধরে রাজশাহীর তাপমাত্রা কমেছে। এ ছাড়া সন্ধ্যার পরে বাতাস বইলেও রাত থেকে বেলাভর কুয়াশা পড়ছে। সকাল ৯টায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ। সন্ধ্যা ৬টায় বাতাসের আর্দ্রতা ৮৬ শতাংশ।

জেলার বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, বোরোর বীজতলায় কোথাও হলুদ, কোথাও লালচে বর্ণ ধারণ করছে। আবার অনেক জায়গায় গাছ বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে। কোনো কোনো বীজতলার চারা মারা যেতে শুরু করেছে। তবে কৃষি কর্মকর্তা বলছেন, তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আক্রান্ত বীজতলা সেরে উঠবে। কুয়াশা থেকে রক্ষার জন্য পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখতে হবে।

পবার হরিয়ান ইউনিয়ন এলাকার কৃষক মাসুদ বলেন, কয়েকদিন আগেও বোরো ধানের বীজতলা সবুজ ছিল। কয়েকদিনের তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশার কারণে ধানের চারার পাতা মরে যাচ্ছে। পুরোবীজ তলায় এমন হচ্ছে। এতে বোরো ধানের চারা মারা যাওয়ার শঙ্কা করা হচ্ছে। প্রচণ্ড ঠান্ডা আর কুয়াশার জন্যই এমন হচ্ছে। এমন কুয়াশা অব্যাহত থাকলে বীজতলা নষ্ট হয়ে যাবে।

গোদাগাড়ী উপজেলার আষাঢ়িয়াদহ ইউনিয়নের কৃষক রসুল বলেন, কয়েকদিন ধরে দুপুরের পরে কিছুটা সূর্যের দেখা মিলছে। তবে রোদের তাপ নেই। সন্ধ্যার পর থেকে বইছে হিমেল হাওয়া। আর গভীর রাত থেকে পড়ছে কুয়াশা। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোজদার হোসেন বলেন, এখনো শীতে কুয়াশার কারণে সেরকম বোরো ধানের বীজতলা নষ্ট হয়নি। সেভাবে ক্ষতি হয়নি। তবে আমরা কৃষকদের পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখার পরামর্শ দিচ্ছি। একই সঙ্গে যে কৃষকের বীজতলায় পানি জমে আছে তা নিষ্কাশন করতে হবে। এ ছাড়া কোনো কীটনাশক ব্যবহারের প্রয়োজন নেই।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর