রবিবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

সেতু নির্মাণে অগ্রগতি নেই

দুইবার মেয়াদ বাড়িয়ে কাজ হয়েছে অর্ধেক

জয়পুরহাট প্রতিনিধি

সেতু নির্মাণে অগ্রগতি নেই

জয়পুরহাট সদর উপজেলার করিমনগরে ছোট যমুনা নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতু -বাংলাদেশ প্রতিদিন

জয়পুরহাট সদর উপজেলার করিমনগরে ছোট যমুনা নদীর ওপর সেতু নির্মাণকাজ শুরুর ২ বছর ৮ মাসেও অর্ধেকও শেষ হয়নি। সেতুটির চার পিলারের মাত্র একটির কাজ শেষ হয়েছে। এতে দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। প্রতিদিন একটি ডিঙ্গি নৌকায় ও ড্রাম-বাঁশ দিয়ে তৈরি ভেলায় ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার হতে হয় অন্তত ৩০ গ্রামের মানুষকে। প্রায়ই ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ‘উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রামীণ সড়কে অনূর্ধ্ব ১০০ মিটার সেতু নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় জয়পুরহাট সদর উপজেলার পুরানাপৈল-করিমনগর সড়কে ছোট যমুনা নদীর ওপর ৮১ মিটার দীর্ঘ গার্ডার সেতু নির্মাণের দায়িত্ব পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মণ্ডল ও ইথেন এন্টারপ্রাইজ জেভি। যার নির্মাণ ব্যয় বাবদ চুক্তিমূল্য সাড়ে ৫ কোটি টাকা। কাজটি সম্পন্ন করার জন্য ঠিকাদার চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন ২০২১ সালের ১২ এপ্রিল। চুক্তি মোতাবেক কাজটির অনুমোদিত সময়সীমা ২০২২ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। পরবর্তীতে ঠিকাদারের আবেদনের প্রেক্ষিতে দুই দফা সময়সীমা বাড়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তার পরেও কাজ শুরুর পর ২ বছর ৮ মাস অতিবাহিত হলেও কাজের অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ৪৫ ভাগ। প্রকল্পের কাজ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় বারবার তাগাদা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ঠিকাদার কাজ শুরু করেননি। ২০২১ সালের ৩০ মে সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। দেড় বছরের মধ্যে কাজটি শেষ হওয়ার কথা ছিল। অথচ প্রায় তিন বছরে সেতুটির চার পিলারের মাত্র একটির কাজ শেষ হয়েছে। অন্য তিন পিলারের কিছু অংশ ঢালাই আবার কোথাও শুধু সাটারিং করা অবস্থায় আছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদারের লোকজন এক দিন কাজ করলে ১০ দিন বন্ধ রাখে। হঠাৎ হঠাৎ ঠিকাদারের লোকজনের দেখা মেলে। নিয়ম অনুযায়ী চুক্তির পর একনাগাড়ে ২৮ দিন কাজ বন্ধ থাকলে সেই কাজের চুক্তি বাতিল হওয়ার বিধান আছে। বুধইল গ্রামের হান্নান মণ্ডল বলেন, এখানকার সেতু অবহেলায় পড়ে আছে। একই গ্রামের আক্কাস আলী বলেন, সেতুটি নির্মাণ না হওয়ায় আমাদের চলাচলের খুব অসুবিধা হয়। এক দিন কাজ করলে দীর্ঘদিন কাউকে দেখা যায় না। করিমনগর স্কুলের আসাদুল্লাহ নামে এক শিক্ষার্থী জানায়, নদীর ওপারেই আমাদের স্কুল। সেখানে যেতে নৌকা ও ভেলায় নদী পার হতে হয়। কখনো কখনো অনেকে নদীতে পড়ে যায়। রশিদা নামে এক নারী বলেন, দাঁড়িয়ে থেকে বাচ্চাদের নৌকায় তুলে দেই, শঙ্কায় থাকি। সেতুটির ৪৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা স্বীকার করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নওগাঁর মেসার্স মণ্ডল ট্রেডার্সের মালিক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সমস্যার কারণে কাজটি সম্পন্ন করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। জয়পুরহাট স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী আলাউদ্দিন হোসেন বলেন, ঠিকাদারের কাজের গতি মন্থর হওয়ায় পারফরমেন্স সিকিউরিটি আমাদের অনুকূলে নেওয়ার জন্য ব্যাংক ব্যবস্থাপককে তিনটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ঠিকাদার যোগাযোগ করে নির্ধারিত সময়ে কাজ সম্পন্ন করার অঙ্গীকার করেছেন। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না করে চুক্তি বাতিল করা হবে।

 

 

 

সর্বশেষ খবর